প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি বাজারে আসায় টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নে বিদ্যমান ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১০’ কে অধিকতর যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পুরনো টেলিযোগাযোগ আইন দিয়ে নিত্যনতুন প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার বিধি কি হবে এ জন্য পুরনো আইনটি সংশোধন করে নতুন আইনের খসড়া প্রণয়ণের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। কমিটিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (টেলিকম)-কে সভাপতি করে ১২ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন প্রতিনিধিও রয়েছে।
কমিটির সদস্যরা হলেন- বিটিআরসির কমিশনার (এলএল), ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের যুগ্ম-সচিব (প্রশাসন), টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক ও ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ কমিউনিকেশন্স স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প লিমিটেড এবং টেলিফোন শিল্প সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালকও কমিটিতে রয়েছেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপসচিব বা সিনিয়র সহকারী সচিব (টেলিকম) পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটি প্রয়োজনে অন্য কারও পরামর্শ গ্রহণ এবং অন্য কাউকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে বলে কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, টেলিযোগাযোগ আইনটি অনেক পুরনো। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে আইনের পরিবর্তন করা প্রয়োজন। প্রতি দিন নতুন নতুন প্রযুক্তি এই খাতে যুক্ত হচ্ছে। আগের আইনে অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কে কোন কিছু বলা নেই। তাই আইনের পরিবর্তন বা সংশোধন করা জরুরী হয়ে পড়েছে। এ জন্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করেছে। কমিটি আইনের একটি খসড়া তৈরি করবে। পরে এটি জনগণের মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে রাখা হবে। পরে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকার আইনটি পাস করবে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন মনে করে, আইন সংশোধন সময়োপযোগী একটি সঠিক সিদ্ধান্ত। টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য এখন সুদূরপ্রসারী উদ্ভাবনী চিন্তা আবশ্যক। এ পদক্ষেপের ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের পথ আরও সুগম হবে। কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, গঠিত কমিটি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ (সংশোধিত ২০১০) অধিকতর যুগোপযোগী করার জন্য আইনের খসড়া প্রদানপূর্বক সরকারের কাছে পেশ করবে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) জারি করা আদেশে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে খসড়া তৈরি করতে বলা হয়েছে। পুরাতন আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হলে টেলিকম খাতের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হবে।