ডা. সাবরিনা গিয়াস :
ডায়াবেটিস বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে প্রচলিত রোগের একটি। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা না হলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অনেকেই নিজের অজান্তে প্রতিদিন এমন কিছু ভুল করেন, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার ওপর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই নির্ভর করে।
আমরা জানি, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
জীবনযাপনের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মনীতি মেনে চললে অনেক ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেমন–
অতিরিক্ত খাওয়া এবং স্থূলতা
ধারাবাহিকভাবে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতা হতে পারে, যা টাইপ টু ডায়াবেটিসের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। স্থূলতার কারণে ইনসুলিনের প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করতে পারে।
চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয়
অত্যধিক চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় গ্রহণ, বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত বা প্যাকেজযুক্ত খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। ঘন ঘন চিনিযুক্ত খাবার খেলে শরীরের জন্য ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। যার ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
পরিশোধিত বা সরল শর্করা
সরল শর্করার পরিবর্তে কম পরিশোধিত শস্য এবং পণ্য, যেমন– ফল, গোটা শস্য ইত্যাদি খান। পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় বাদামি চাল, ওটমিলসহ গোটা শস্যজাতীয় খাবার রাখুন।
ফলের পরিবর্তে ফলের রস
খাদ্যতালিকায় প্রচুর মৌসুমি ফল ও শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যখনই সম্ভব, ফলের রসের পরিবর্তে গোটা ফল খান।
সকালের নাশতা বাদ দেওয়া
সকালের খাবার এড়িয়ে যাওয়া ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। একটি স্বাস্থ্যকর সকালের নাশতা শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া শুরু করে এবং সারাদিন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সকালে নাশতা না করলে পরে খাবারের সময় অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়। এর ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইনসুলিন সংবেদনশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার
স্যাচুরেটেড ও ট্রান্সফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার ইনসুলিন সংবেদনশীলতাকে আরও বাড়াতে পারে। প্রক্রিয়াজাত বা ভাজা খাবারে এসব উপাদান উপস্থিত থাকে।
ফাইবার না থাকা
খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবারযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত নিশ্চিত করুন। ফাইবার ভাঙতে এবং হজম করতে প্রচুর শক্তি লাগে। এর ফলে রক্তে শর্করার স্থির মাত্রা বজায় থাকে।
লেখক : সহকারী রেজিস্ট্রার (মেডিসিন), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর।