সারাবিশ্বে দিন দিনই বিস্তৃত হচ্ছে ডিজিটাল অর্থনীতির পরিসর। করোনা মহামারিতে আরও বেড়েছে অনলাইন কার্যক্রম। অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে বিমানের টিকিট, ঘরের আসবাব, গাড়িসহ প্রায় সবকিছুই।
ডিজিটাল অর্থনীতি মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ভারতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান রেডসিয়ার বলছে, ২০২৩ সালের মধ্যে এ দুই অঞ্চলের ডিজিটাল অর্থনীতি ১০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে।
রেডসিয়ারের গবেষণা বলছে, ২০২০ সালে এ অঞ্চলের ডিজিটাল অর্থনীতির আকার ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি ডলার। গত বছর ডিজিটাল খাতে সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণ ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের। মূলত করোনা মহামারিই মধ্যপ্রাচ্যের ভোক্তাদের অনলাইন নির্ভর করেছে। ২০১৭ সালে মধ্যপ্রাচ্য আর উত্তর আফ্রিকায় অনলাইন বিক্রি ছিল ৮০০ কোটি ডলার। ২০২১ সালেই অনলাইন বিক্রি ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে। ২০২৩ সালে মাইলফলকে পৌঁছাবে এ অঞ্চলের ডিজিটাল অর্থনীতির আকার।
রেডসিয়ারের গবেষণা বলছে, ২০২৩ সালে ৩৬ শতাংশ থাকবে ভ্রমণবিষয়ক বিমান কিংবা হোটেলের বুকিং। ৪২ শতাংশ থাকবে নিত্যপ্রয়োজনীয় নয় এমন পণ্যের খুচরা বিক্রি। ১৩ শতাংশ থাকবে খাবার ও কোমল পানীয়র বিক্রি। ৯ শতাংশ থাকবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের খুচরা বিক্রি। রেডসিয়ার জানায়, মিনা অঞ্চল হিসেবে পরিচিত এ অঞ্চলের ডিজিটাল অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি থাকবে সৌদি আরব আর সংযুক্ত আরব আমিরাত। অন্তত ৭০ শতাংশ অংশগ্রহণ থাকবে এ অঞ্চলের।
বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত আর সৌদি আরবের ৯০ শতাংশ ভোক্তাই অনলাইনে কেনাকাটায় বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। উন্নত দেশগুলোতে ডিজিটাল গ্রাহকের হার প্রায় ৭০ শতাংশ।
মধ্যপ্রাচ্যের অনলাইন বিক্রিতে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য ছিল ৪০ শতাংশ। এখন যা প্রায় ২০ শতাংশে নেমেছে। স্থানীয়করণ, আরও ডিজিটাল ও নিয়ন্ত্রণ আরোপের কারণে দেশীয় অনলাইনে বিক্রি বাড়ছে। রেডসিয়ারের পরিসংখ্যান বলছে, এ খাতের অবদান ২০১৯ সালে ২৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২০ সালে ৪১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছর করোনার কারণে বিধিনিষেধে ভ্রমণ খাত স্থবির হয়ে যায়।
এ খাতের বুকিংয়ের অভাবে ২০২০ সালে ডিজিটাল অর্থনীতির আকার সংকুচিত হয়। ডিজিটাল অর্থনীতিতে অনলাইনে পণ্য ও পরিষেবা বিক্রির অবদান এখন ২৭ থেকে ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। তবে উন্নত দেশগুলোর তুলনায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে অনলাইন কেনাকাটায় নাগরিকদের অংশগ্রহণে বৈষম্য রয়েই গেছে। কারণ —না অঞ্চলের অনেক মানুষের কাছে এখনো ইন্টারনেট সহজলভ্য নয়। এক্ষেত্রে ১০ কোটি ডলার বিনিয়োগ এ পরিস্থিতিকে পাল্টে দিতে পারে বলে মনে করে রেডসিয়ার।