পানিতে গুঁড়োদুধ মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ‘পাস্তুরিত তরল দুধ’। জানা গেছে, দেশের সব নামি-দামি দুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এ প্রক্রিয়ায় তৈরি তরল দুধ প্যাকেটজাত করে ‘পাস্তুরিত দুধ’ বলে বাজারজাত করছে। ভোক্তারা সরল বিশ্বাসে এসব দুধ কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। এক গবেষণায় দেশের তরল দুধ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল পরিমাণ গুঁড়োদুধ ক্রয়ের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তরল দুধ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো কেন এত অধিক পরিমাণে গুঁড়োদুধ ক্রয় করে থাকে?
এছাড়া একই গবেষণায় পাস্তুরিত তরল দুধে আখের চিনির অস্তিত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মে দুধের মধ্যে ‘দুধের চিনি’ অর্থাৎ ‘ল্যাকটোজ’ থাকার কথা। দুধে আখের চিনি কোথা থেকে এলো- এর সদুত্তর খোঁজাও জরুরি। অবশ্য এ ব্যাপারে তরল দুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বলছে, বর্ষাকালে গাভীর খাবারে তারতম্য ঘটায় ‘এসএনএফের’ মাত্রা কম থাকে। তাদের মতে, ‘এসএনএফের’ মাত্রা ৮ শতাংশসহ অন্যান্য প্যারামিটার ঠিক রাখতেই নাকি পাস্তুরিত দুধের সঙ্গে ‘স্কিমড মিল্ক পাউডার’ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশুদ্ধ তরল দুধে ‘এসএনএফের’ মাত্রা কখনই ৮ শতাংশের কম পাওয়া যায় না। তাই ‘এসএনএফের’ ন্যূনতম মাত্রা ৮ শতাংশ বজায় রাখতে ‘স্কিমড মিল্ক পাউডার’ ব্যবহারের যুক্তি ধোপে টেকে না। একইসঙ্গে দেশের তরল দুধ উৎপাদনকারী ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক তথ্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলেও তারা অভিমত প্রকাশ করেছেন। বস্তুত, পানিতে গুঁড়োদুধ মিশিয়ে তৈরি করা দুধকে পাস্তুরিত বলে বিক্রি করা অনৈতিক তো বটেই, একইসঙ্গে তা দেশ ও দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।
সে ক্ষেত্রে গুঁড়োদুধ পানিতে মিশিয়ে বিক্রি করতে হলে প্যাকেটের গায়ে অবশ্যই তা উল্লেখ করতে হবে এবং ‘পাস্তুরিত’ বলে বিক্রি করা যাবে না।