তুরস্কের নাগরিক সংক্রামক রোগ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত সন্দেহে রাজধানীর মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি তার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুর ২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসেছিলেন।
সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের পরিচালক ডা. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ডা. মিজানুর বলেন, মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত সন্দেহে ওই ব্যক্তিকে বিকেল ৩টার দিকে আমাদের এ হাসপাতালে (মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে) ভর্তি করা হয়েছে। এরই মধ্যে আইইডিসিআর (রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট) ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছে। আমরা ১০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ডে তাকে রেখেছি। পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে জানা যাবে, ওই ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষেই মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত কি না।
জানা গেছে, এদিন দুপুরে তুরস্কের নাগরিক আকসি আলতে (৩২) নামের ওই ব্যক্তি বিমানবন্দরে পৌঁছালে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় মাঙ্কিপক্স ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে তাকে বিমানবন্দর হেলথ সেন্টারে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে।
ওই ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন অংশে মাঙ্কিপক্সের কিছু উপসর্গ দেখা গেছে বলে বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে।
ডা. মিজানুর রহমান জানান, মাঙ্কিপক্স শনাক্ত ব্যক্তির চিকিৎসা দিতে মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালকে ডেডিকেটেড করা হয়েছে। এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসা প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এখানে ১০টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যদিও মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত কোনো রোগী এখনো আমাদের হাসপাতালে আসেনি। এ ধরনের কোনো রোগী এলে আমরা চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত আছি।
সম্প্রতি পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার জঙ্গলের ক্ষুদ্রাকৃতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ইঁদুরজাতীয় প্রাণীর মধ্যে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এরই মধ্যে গত ৭ মে যুক্তরাজ্যে নাইজেরিয়া থেকে আসা প্রথম কোনো ব্যক্তির শরীরে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস শনাক্ত হয়। এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মিলেছে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে।
দুদিন আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, বিশ্বের ৩০টি দেশে এ পর্যন্ত ৭০০ জনের বেশি মানুষের শরীরে মাঙ্কিপক্সের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২১ জনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
মাঙ্কিপক্ষের উপসর্গ বা লক্ষণ সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ মৃদু। শুরুতে জ্বর, মাথা ও শরীর ব্যাথা, ক্লান্তি অনুভব হতে পারে। লসিকা গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। প্রথম দু-তিন দিনের মধ্যে মুখ হয়ে সারা গায়ে ফুসকুড়ি ওঠতে পারে। যেগুলো দেখতে অনেকটা বসন্তের মতোই লালচে। পরে সেগুলো ক্রমশ জলপূর্ণ দানা আকৃতি নেয় এবং কয়েকদিনের মধ্যেই শুকিয়ে পড়ে যায়। ভাইরাসটি কোনো ব্যক্তির শরীরে দুই থেকে চার সপ্তাহ স্থায়ী হয়। এতে বড় কোনো জটিলতার শঙ্কা থাকে না।