মুখের ত্বকে বিভিন্ন কারণে ব্রণ হয়ে থাকে। অনেক সময় এই ব্রণ মাথার ত্বকেও বা চুলের গোড়ায় হয়ে থাকে। মুখে ব্রণ হলে অনেক সময় ত্বক বিশ্রি দেখায়, যার কারণে অনেক তরুণ-তরুণীরা চিন্তিত হয়ে পড়েন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ব্রণ হলে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা না নিয়ে বাজার থেকে বিভিন্ন ক্রিম সংগ্রহ করে এবং তা মুখে ব্যবহার করে ত্বকের অনেক ক্ষতি করে ফেলেন। অন্যদিকে মাথার ত্বকে ব্রণ হলে সঠিক চিকিৎসা ও পরিচর্যার অভাবে তা ইনফেকশনে রূপ নেয়। সেইসঙ্গে চুল পড়তে থাকে আক্রান্ত স্থান থেকে।
তাই মুখ ও মাথার ত্বক যেখানেই ব্রণ হোক না কেন তার সঠিক যত্ন নেয়া জরুরি। যারা ব্রণ সমস্যা দূর করতে কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করেন তাদের অবশ্যই ব্রণ হওয়ার কারণগুলো জানা দরকার এবং ব্রণ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে কীভাবে ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তা জানা জরুরি।
ব্রণ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
ব্যাকটেরিয়া জনিত ব্রণ হলে: অনেক সময় ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে ব্রণ হয়ে থাকে। এই জাতীয় ব্রণ ছোট বা বড় আকারে হতে পারে। এরমধ্যে পুঁজ বা অনেক সময় শক্ত শালের মতো হয়ে পেকে যায়। ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডসগুলো কিন্তু ব্যাকটেরিয়া একনির মধ্যেই পড়ে।
অতিরিক্ত সিবাম আপনার ত্বকের লোমকূপের গোড়ায় আটকে যায়। তখনই এ সমস্যাগুলো হয়। লোমকূপের গোড়ায় ব্যাকটেরিয়া বাড়তে শুরু করলেই ত্বকে ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস সমস্যা বাড়ে।
সাধারণত মুখের টি-জোন এবং ঘাড়ে ব্যাকটেরিয়া ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এগুলোর চিকিৎসায় রেটিনল, বেনজয়াইল পেরক্সাইড এবং স্যালিসিলিক এসিডের মতো ক্রিম ব্যবহারের পরামর্শ দেন ডাক্তাররা।
ফাঙ্গাল বা ছত্রাকজনিত ব্রণ সাধারণত মালাসেসিয়ার কারণে ছত্রাক ব্রণ দেখা দেয়। হোয়াইটহেডস ও ছোট ছোট ব্যথাযুক্ত ব্রণ হয় ছত্রাকের কারণে। একই স্থানে ঘামাচির মতো একটি বা দুটি নয়, একগুচ্ছ ব্রণ হয় এক্ষেত্রে। চুলকানির সঙ্গে ব্যথাও হয় ফাঙ্গাল একনি হলে।
মাথার ত্বকে জমাট বাধা খুশকি ও ব্রণ হওয়ার জন্যও দায়ী মালাসেসিয়ার ছত্রাক। ছত্রাকজাতীয় ব্রণ সাধারণত কপাল, কাঁধ, পিঠ এবং ঘাড়ে বেশি হয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অ্যান্টি-ফাঙ্গালযুক্ত বডি ওয়াশ বা শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। সালফার সমৃদ্ধ সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা হয়। এর থেকে বাঁচতে ঘামযুক্ত কাপড় পরা এড়িয়ে চলুন, জিমের পোশাক পরিবর্তন করুন, কোনো কাজ করার পর হাত ও মুখ ধুয়ে ফেলুন। দিনে অন্তত দু’বার গোসল করুন।
ফলিকুলাইটিস জনিত ব্রণ: ফলিকুলাইটিস মূলত চুলের ফলিকের প্রদাহ। ওয়াক্স বা শেভ করার পর এ ধরনের ব্রণ হয়। ব্রণের জন্য দায়ী হলো শেভ করা। বিশেষ করে একই রেজার যদি পুনরায় ব্যবহার করা হয় তাহলে এমন ব্রণ হতে পারে। এক্ষেত্রে চুলের গোড়ায় পুঁজ ফোঁড়ার মতো ফলিকুলাইটিস হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফলিকুলাইটিস হাতে, পিঠে এবং পায়ে হয়।
চর্ম বিশেষজ্ঞরা সাধারণত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ক্লিনজার এবং টপিক্যালস দিয়ে এ ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করেন। ওয়াক্সিং এবং শেভিংয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যবহৃত লেজার ব্যবহার করবেন না। যেহেতু ব্রণ তরুণ-তরুণীদের একটি সমস্যা তাই ব্রণ হলে তা নখ দিয়ে বারবার খুটাবেন না। দেখা যায় শুধু নখ দিয়ে ব্রণ খোটানোর কারণে তা ইনফেশন হয়ে মুখে বিশ্রি অবস্থার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে ব্রণ পরিত্রাণে সর্বাধুনিক অনেক চিকিৎসা আছে। আপনি যেকোনো ডার্মাটোলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সহায়তায় ব্রণ থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। যদি ব্রণ হয়ে তা সমস্ত মুখে ইনফেকশন হয়ে যায় এবং তা মুখের ত্বকে ছড়িয়ে পড়ে আমরা তা একনেস্কার চিকিৎসার মাধ্যমে আমরা সম্পূর্ণ নিরাময় করে থাকি।
আমার ওয়াইফের মুখে বরুণ ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খাওয়াচ্ছে কিন্তু ভালো হওয়ার কোন নমুনায় দেখছি না