দেশের বাজারে ৩৫০ সিসি অনুমোদন পাওয়ার পর এবার সামনে এলো নতুন তথ্য। স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হলে ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল দেশের সড়কে চালানোর অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে ওই বৈঠক হয়।
বাংলাদেশের বাজারের শীর্ষস্থানীয় বাজাজ মোটরসাইকেলের নির্মাতা উত্তরা মোটরস বিআরটিএ থেকে নতুন মডেলের অনুমোদন পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে ২৫০ সিসি পালসার এন-এর প্রথম ব্যাচ তৈরি করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরেছে। কোম্পানিটি চলতি বছরের জুনের শুরুতে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিল। ইফাদ মোটরস আগামী বছর থেকে চট্টগ্রামের কারখানায় রয়্যাল এনফিল্ড মোটরসাইকেল তৈরি শুরু করবে।
বৈঠকের কার্যবিবরণী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ (বিএমএএমএ) সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
কয়েক মাস ধরে চলা সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়েছে এ সিদ্ধান্ত। উল্লেখ্য দুই বছর আগে শিল্প মন্ত্রণালয় স্থানীয়ভাবে ৫০০ সিসি মোটরসাইকেল তৈরির জন্য কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া শুরু করে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতিতে সংশোধনীর পর বর্তমান সীমা ১৬৫ সিসি থেকে বাড়িয়ে ৫০০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল এবং যন্ত্রাংশ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।
তবে ৭ সেপ্টেম্বরের বৈঠকের আগ পর্যন্ত রোড পারমিটের অনুমোদনের নিশ্চয়তা না থাকায় তুলনামূলকভাবে বড় বিনিয়োগের উচ্চ সিসির মোটরসাইকেলের স্থানীয় উৎপাদন শুরু হয়নি।
বিএমএএমএ’র সভাপতি এবং উত্তরা মোটরস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা সরকারের অনুমোদনের প্রশংসা করি। এটি মোটরসাইকেল উৎপাদনশিল্পে আরও বিনিয়োগ আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে অনেক বিভ্রান্তি দূর করেছে।’ তিনি আরও বলেন, কোম্পানিগুলো এখন তাদের বিনিয়োগ এবং পণ্য নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করতে পারবে।
দেশের মোটরসাইকেল উৎপাদনের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান রানার অটোমোবাইলস সরকারের অনুমোদন নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই ৫০০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল রপ্তানি করছে।
অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলোও দ্রুত উচ্চতর সিসিসমৃদ্ধ মোটরসাইকেল বাজারে নামানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।
তবে শিল্পসংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন, আগে বাজার যাচাই না করে উচ্চ সিসির মোটরসাইকেল তৈরিতে বিনিয়োগ করা আর্থিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। কেউ কেউ মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন সক্ষমতার ওপর সরকারের কিছু বিধিনিষেধ বহাল রাখার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।