নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিবর্তন করা হয়েছে ঋণ অবলোপনের নীতিমালা। এতে ঋণখেলাপী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান উভয়ই সুবিধা এবং লাভবান হবেন। এতে কমবে খেলাপী ঋণ। গত সোমবার (১ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জারিকৃত নির্দেশনাটি দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। যেসব ঋণ বা বিনিয়োগ হিসাবের বকেয়া দীর্ঘদিন আদায় বন্ধ রয়েছে ও নিকট-ভবিষ্যতে কোনরূপ আদায়ের সম্ভাবনাও নেই, এসব ঋণ, ব্যাংক অবলোপন করতে পারবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে। এছাড়া যেসব ঋণ/বিনিয়োগ হিসাব একাধিক্রমে তিন বছর মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণীকৃত রয়েছে, এরূপ ঋণও অবলোপন করতে পারবে ব্যংক। তবে, প্রতিষ্ঠান নিজস্ব বিবেচনায় মৃত ব্যক্তির নিজ নামে অথবা তার একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে গৃহীত ঋণ অর্থঋণ আদালত আইন-২০০৩ অনুযায়ী মামলাযোগ্য না হলে, মামলা দায়ের ব্যতি রেখে অবলোপন করতে পারবে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন থেকে চাইলে তিন বছরের মন্দমানের খেলাপী ঋণকে আর্থিক হিসাব থেকে বাদ দিতে পারবে। আর এতেই কাগজে কলমে খেলাপী ঋণ কম দেখাতে পারবে ব্যাংকগুলো। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপনের ক্ষেত্রে মামলাও করতে হবে না। এছাড়া এসব ঋণের পুরোটার ওপর নিরাপত্তা সঞ্চিতিও না রাখার সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে কোন ঋণ মন্দমানে শ্রেণীকৃত হওয়ার পাঁচ বছর পূর্ণ না হলে তা অবলোপন করা যেত না। আর মামলা না করে অবলোপন করা যেত সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার ঋণ।
নতুন নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া কোন ঋণ অবলোপন করা যাবে না। অবলোপনের পরও প্রতিষ্ঠানের দাবি বহাল থাকবে। আর ঋণের দায় সম্পূর্ণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত আগের মতোই তিনি খেলাপী হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
অবলোপন করা ঋণ পুনর্তফসিল বা পুনর্গঠন করা যাবে না। তবে পুরো দায় শোধ করে দেয়ার শর্তে গ্রাহক ঋণ পরিশোধের নতুন পরিশোধ সূচি পাবেন। অবলোপন ঋণ আদায়ের জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ইউনিট গঠন করতে হবে। আর পরিচালনা পর্ষদের কারও ঋণ অবলোপন করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। এছাড়া অবলোপনকৃত ঋণের হিসাবের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) যথারীতি রিপোর্ট করতে হবে।