বাজারে বিক্রি হওয়া পাস্তুরিত তরল দুধের ১১টি নমুনা পরীক্ষায় ‘ভারী ধাতব’ পেয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। দুধের ওই নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬টি ল্যাবে। এ ঘটনায় ১০টি পাস্তুরিত দুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে স্থাপিত বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে বুধবার এই মামলা করেন নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান। পরে মামলা দায়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
গত ১৬ জুলাই দেশের ১১টি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পাস্তুরিত তরল দুধের নমুনা পরীক্ষা করতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে পৃথক দুটি ল্যাবে ১১টি প্রতিষ্ঠানের তরল দুধ পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১০টি প্রতিষ্ঠানের দুধেই মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর ভারী ধাতব পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
মামলা দায়ের করা কোম্পানি ১০টি হচ্ছে-বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্কভিটা), বারো আউলিয়া ডেইরি মিল্কের (ডেইরি ফ্রেশ), ইগলু ডেইরি লিমিটেড, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ (ফার্ম ফ্রেশ মিল্ক), আফতাব মিল্ক, শিলাইদহ ডেইরি (আল্ট্রা মিল্ক), আড়ং ডেইরি, প্রাণ মিল্ক, ইছামতি ডেইরি লিমিটেড (পিওর), সেইফ মিল্ক।
এর আগে প্রাণসহ ১১টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধে সিসার উপস্থিতি পাওয়ার কথা জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। যে ৬টি ল্যাবে দুধের ওই নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে- বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, বিসিএসআইআর, প্লাজমা প্লাস, ওয়াফেন রিসার্চ, পারমাণু শক্তি কমিশন ও আইসিডিডিআরবি’র ল্যাবে পাস্তুরিত দুধ, খোলা দুধ ও গোখাদ্য পরীক্ষা করেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
সেই পরীক্ষায় বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত ১৪টি কোম্পানির মধ্যে ১১টির পাস্তুরিত দুধে সিসা পাওয়া গেছে। কোনও কোনোটিতে পাওয়া গেছে ক্যাডমিয়াম। কোম্পানিগুলো হলো- মিল্কভিটা, ডেইরি ফ্রেশ, ইগলু, ফার্ম ফ্রেশ, আফতাব মিল্ক, আল্ট্রা মিল্ক, আড়ং ডেইরি, প্রাণ মিল্ক, আইরান, পিওর, সেইফ মিল্ক।
আদালতের আদেশে বলা হয়, ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিএসটিআই কী আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছে, সে বিষয়ে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দিতে হবে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে ওই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।