সোমবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

পোশাক শিল্পে অর্ডার বাড়লেও কমছে দাম

প্রকাশঃ

করোনাকালে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্পে এবার অর্ডার বাড়ছে। রপ্তানি আয়েও চমক দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু বৈশ্বিক ক্রেতাদের সঙ্গে দরকষাকষিতে ব্যর্থ হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। আবার ক্রেতাদের অনৈতিক চাপেও দাম কমছে। এই সংকট উত্তরণে পোশাকশিল্প মালিকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করে বাজারে শৃঙ্খলা ফেরানোর তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার সুযোগ নিয়ে দাম কমিয়ে দিচ্ছেন ক্রেতারা। আবার একই ক্রেতা চীন ও ভিয়েতনামে বাড়তি মূল্য দিচ্ছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, করোনাকালে গত জুলাইয়ের পর আগস্টেও বেড়েছে রপ্তানি আয়। পোশাকশিল্পের ওপর ভর করেই রপ্তানিতে এই প্রবৃদ্ধির দেখা মিলেছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) পণ্য রপ্তানি আয় বেড়েছে ১ দশমিক ০৮ শতাংশ।

গত কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির পর আগস্টে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে নিট পোশাকে। ওভেন পোশাকে প্রবৃদ্ধি কিছু কম হলেও নিট পোশাকে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি পোশাকশিল্পের জন্য সুখবর হিসেবেই দেখছেন উদ্যোক্তারা।

এ প্রসঙ্গে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, মহামারী করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে গত এপ্রিল মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে অবিশ্বাস্য উন্নতি হয়েছে। এটা জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকলেই পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াবে পোশাকশিল্প। তবে ক্রেতাদের আস্থা ধরে রাখতে হবে। করোনার কারণে আমাদের পোশাকশিল্প লাভবান হবে। যদিও চীনের ব্যবসা ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় বেশি যাবে। এই দুটো দেশের অবকাঠামো অনেক ভালো। তবে বাংলাদেশও সে সুবিধা পাবে।

ইপিবির পরিসংখ্যান বলছে- চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাসে (আগস্ট) ২৯৬ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে প্রায় ২৪৭ কোটি ডলার। জুলাই মাসে এর পরিমাণ ছিল ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে এই খাতের রপ্তানি আয় কমেছে ৭৭ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

অবশ্য, জুলাই ও আগস্ট এই দুই মাস মিলে তৈরি পোশাকশিল্পের রপ্তানি আয় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলেও তৈরি পোশাক খাত রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। এ সময় এ খাতের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫৬১ কোটি ১৬ লাখ ডলারের বিপরীতে হয়েছে ৫৭১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এর মধ্যে নিটওয়্যার থেকে এসেছে ৩১১ কোটি ৪৮ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ আর গেল অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের চেয়ে ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। একক মাস হিসাবে গত জুলাইয়েও নিটওয়্যারের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয় ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর মাস ধরে নির্ধারণ করা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ওই মাসে ২৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি আয় এসেছিল নিট পোশাক রপ্তানি থেকে।

তবে জুলাই-আগস্ট মিলেও ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির চক্কর থেকে বের হতে পারেনি ওভেন পোশাকের রপ্তানি আয়। এই দুই মাসে ওভেন থেকে এসেছে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ আর গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ০৬ শতাংশ কম।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, অনেক ক্রেতা চীনে অর্ডার দিচ্ছেন না। এই অর্ডার বাংলাদেশে আসবে। ফলে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে সামনের দিনগুলোতে। এখন প্রয়োজন সক্ষমতা বাড়ানো।

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ