বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য দূর করে রফতানি বাড়াতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, বলেছেন, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে যে পণ্য রফতানি করে আমরা সে তুলনায় করতে পারি না, এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৈষম্য দেখা দিয়েছে।
গতকাল (০৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম রেদওয়ান হোসেন, ডব্লিইউটিও-এর মুনীর চৌধুরী, শরিফা খানসহ (রফতানি) সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
রবার্ট মিলার বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে আমি একজন ভালো সেলসম্যান হতে চাই। বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক ভালো। বাংলাদেশর সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য আরো বাড়াতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানায় কাজের সুনির্দিষ্ট উন্নতি হয়েছে। কারখানাগুলোতে নিরাপদ কাজের পরিবেশ আগের থেকে ভালো হয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্সের কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। বাণিজ্য বৃদ্ধি করলে উভয় দেশ উপকৃত হবে। যুক্তরাষ্ট্র একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান অনেক। বাংলাদেশে মার্কিন বাণিজ্য বাড়াতে কমার্শিয়াল কাউনন্সিলর নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বৈষম্য ও ঘাটতি দূর করতে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এজন্য বাংলাদেশ সরকার যা করা দরকার তা করবে। সরকার বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে। বাংলাদেশে এনার্জি, পাওয়ার, শিপিং, এলএনজি, এবং এয়ারলাইন্স খাতে প্রায় ২ বিলিয়নের বেশি মার্কিন বিনিয়োগ রয়েছে। এ বিনিয়োগের পরিমাণ আরো বাড়ানোর সুযোগ এসেছে। এতে করে উভয় দেশ লাভবান হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের তৈরি পোশাক খাতের বড় বাজার। গত অর্থবছরে আমরা সে দেশে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি করেছি। আর আমেরিকা রফতানি করেছে মাত্র ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ৬০ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ধরা হয়েছে তৈরি পোশাকে। যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। যেকোনো পরিমাণ পণ্য রফতানি করতে বাংলাদেশ সক্ষম।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আরও বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্স ও ন্যাশনাল ইনেশিয়েটিভ কারখানাগুলো পরিদর্শন করেছে। এ পর্যন্ত ৯০ ভাগের বেশি কারখানা পরিদর্শ সম্পন্ন হয়েছে। তৈরি পোশাকের কারখানাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি সময়োপযোগী করা হয়েছে। একারণে তৈরি পোশাকের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এজন্য এ পণ্যের উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করা দরকার।