বাংলাদেশ ও ভুটান দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সই করেছে। রবিবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশকে ভুটানের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়ার ঐতিহাসিক দিনে এ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সই হয়।
নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তি সই করেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ভুটানের অর্থ-বাণিজ্যমন্ত্রী লোকনাথ শর্মা।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটান প্রান্ত থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং সংযুক্ত ছিলেন।
বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে এই চুক্তি সইয়ের ফলে বাংলাদেশের ১০০টি পণ্য ভুটানে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। আর ভুটানের ৩৪টি পণ্য বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাবে। পরবর্তী সময় আলোচনার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে পণ্য সংখ্যা বাড়ানো হবে।
বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা থেকে বেড়ে ৫৭ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়।
ভুটানে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক, খাদ্যসামগ্রী, প্লাস্টিক, ওষুধ, গৃহসজ্জাসামগ্রী, ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী রপ্তানি করে থাকে। আর ভুটান থেকে বোল্ডার পাথর, সবজি-ফলমূল, নির্মাণসামগ্রী, ক্যামিকেলস ইত্যাদি পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে মোট বাণিজ্য ছিল ১২.৭৭ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ০.৬১ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করে এবং একই সময়ে আমদানি করে ১২.১৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুদেশের বাণিজ্য ৫৭.৪৬ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে গ্র্যাজুয়েশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে কিছু বাণিজ্য সুবিধা লোপ পাবে। এই বাণিজ্য সুবিধা দ্বিপক্ষীয়ভাবে অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ বর্তমানে ১১টি দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে।
১৯৭১ সালে ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ভুটান। ঐতিহাসিক দিনটি সামনে রেখে ৬ ডিসেম্বর চুক্তি সই হয়।