গত বছরের জুন মাসে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু রাজধানী ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় চুলা জ্বলছে না। বেশি দাম দিয়েও মানুষ গ্যাস পাচ্ছেন না। এর মধ্যেই ফের গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। দুই চুলায় ৫১২ টাকা এবং এক চুলায় ৩৯০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
মিটার ছাড়া গ্রাহকদের জন্য মাসে গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে দুই চুলায় ৬০ ঘনমিটার ও এক চুলায় ৫৫ ঘনমিটার ধরা হয়। এতে দুই চুলার মাসিক বিল ১ হাজার ৮০ ও এক চুলার বিল ৯৯০ টাকা ঘোষণা করা হয়। গত জুনে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের এই দাম বাড়িয়েছে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
সেই বৃদ্ধির ১০ মাস পরে আপত্তি জানিয়েছে দিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। তারা এখন দুই চুলার মাসিক বিল হবে ১ হাজার ৫৯২ টাকা এবং এক চুলায় বিল হবে ১ হাজার ৩৮০ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে তিতাস বিইআরসির কাছে সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়েছে। কমবেশি ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোনো সমীক্ষা বা তথ্য বিশ্লেষণ না করেই ঘনমিটারের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। এতে কারিগরি ক্ষতি বেড়েছে এবং সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তিতাস আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে।
এদিকে তিতাসের প্রস্তাব বিবেচনার জন্য গ্রহণ করেছে কমিশন। তবে বিধি মোতাবেক এ নিয়ে করণীয় ঠিক করতে প্রক্রিয়া শুরু করবে তার আগে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কাছে কিছু তথ্য যেছে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন। এসব তথ্য আসার পরে দাম বাড়ানো প্রক্রিয়া শুরু হবে, তবে তার আগে নয় বলে জানা গেছে।
বিইআরসির সাবেক সদস্য (গ্যাস) বলেন, এর আগে যাচাই–বাছাই করেই দুই চুলায় ৬০ ঘনমিটার নির্ধারণ করা হয়েছিল। যদিও এটি আরও কমানো চিন্তা ছিল কমিশনের। তিতাসকে সতর্ক করে বেশি কমানো হয়নি। অবৈধ সংযোগ দিয়ে একটি গোষ্ঠী দিনদুপুরে ডাকাতি করছে আর কারিগরি ক্ষতির দায় চাপাচ্ছে মিটার ছাড়া গ্রাহকদের ওপর।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের চেয়ারম্যান মো. নূরুল আমিন বলেন, তিতাস থেকে একটি প্রস্তাব পাওয়া গেছে। প্রস্তাবটি বিবেচনায় নিয়েছে কমিশন। তবে বিধি মোতাবেক এ নিয়ে করণীয় ঠিক করা হবে। তার আগে তিতাসের কাছ থেকে কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। এসব তথ্য আসমার পরে প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে। তার আগে নয়।
পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহারকারী গ্রাহকদের চুলার বিল বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। দুই চুলায় মাসিক গ্যাসের বিল ৫১২ টাকা বাড়াতে চায় রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলায় গ্যাস সরবরাহকারী এই বিতরণ সংস্থা। আর এক চুলায় মাসে ৩৯০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত জুনে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের দাম বাড়ায় জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এ সময় প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৮ টাকা করা হয়। তবে মিটার ছাড়া গ্রাহকদের জন্য মাসে গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে দুই চুলায় ৬০ ঘনমিটার ও এক চুলায় ৫৫ ঘনমিটার ধরা হয়। এতে দুই চুলার মাসিক বিল ১ হাজার ৮০ ও এক চুলার বিল ৯৯০ টাকা ঘোষণা করা হয়। সেই ঘোষণার ১০ মাস পর এখন আপত্তি জানাচ্ছে তিতাস। তিতাসের নতুন প্রস্তাব কার্যকর হলে দুই চুলার মাসিক বিল হবে ১ হাজার ৫৯২ টাকা। আর এক চুলায় বিল হবে এক হাজার ৩৮০ টাকা। বিইআরসির কাছে সম্প্রতি একটি চিঠি দিয়েছে তিতাস। এতে বলা হয়, কমবেশি ২৫ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে কোনো সমীক্ষা বা তথ্য বিশ্লেষণ না করেই ঘনমিটারের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বিইআরসি। এতে কারিগরি ক্ষতি বেড়েছে এবং সরকারি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তিতাস আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
তিতাসের অভিযোগ সঠিক নয়। গত বছর গ্যাসের দাম নিয়ে শুনানির সময় তিতাসের ৩ লাখ ২০ হাজার ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির ৫০ হাজার প্রিপেইড মিটার গ্রাহকের গ্যাস বিল বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে। এতে দেখা যায়, দুই চুলার গ্রাহকেরা গড়ে ৪৫ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন মাসে। কিন্তু এটি কিছুটা বাড়িয়ে ৬০ ঘনমিটার নির্ধারণ করা হয়েছিল মিটার ছাড়া গ্রাহকদের জন্য। একই সময় বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে ঘনমিটারের পরিমাণ কমানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিইআরসির কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের সদস্য (গ্যাস) ড.মো. হেলাল উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, তিতাসের প্রস্তাব আমাদের কাছে এসেছে। আমরা এর কাজ শুরু করেছি।
তিতাসের প্রিপেইড মিটার গ্রাহকদের বিল বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন বলা হয়, প্রতি মাসে মিটার গ্রাহকদের কাছ থেকে গড়ে ১৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা করে আয় করেছে তিতাস। প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের বর্তমান দাম ১২ টাকা ৬০ পয়সা হিসাবে তাঁদের মাসিক ব্যবহার দাঁড়ায় প্রায় ৩৪ ঘনমিটার। এরপর গ্যাসের দাম নির্ধারণের সময় বিইআরসির কাছে দুই চুলায় মাসিক ব্যবহার ৪০ ঘনমিটার করার দাবি জানিয়েছিল ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।