করোনার মহামারির কারনে দুই বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর সোমবার (১১ অক্টোবর) থেকে নতুন করে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার কাজ শুরু করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ। তবে সোমবার থেকে এ কাজ শুরু হলেও একজন চালকের লাইসেন্স পেতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানান, কর্মকর্তারা।
বিআরটিএ’র পরিচালক এবং মুখপাত্র শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেছেন, ইতোমধ্যে লাইসেন্স ছাপানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। লাইসেন্স হাতে পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকদিন।
বিআরটিএ থেকে লাইসেন্স পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় সাড়ে ১২ লাখ চালক। সংস্থাটি বলছে, কারিগরি জটিলতায় তাদের লাইসেন্স ইস্যু করা যায়নি। এই চালকদের অস্থায়ী লাইসেন্স ইস্যু করে আসছিল বিআরটিএ।
বিআরটিএ’র পরিচালক মাহবুব-ই-রব্বানী বলেছেন, লাইসেন্স ছাপা হলে আবেদনকারী চালককে এসএমএস বা মোবাইল বার্তার মাধ্যমে সংগ্রহের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন : স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ থেকে চালু হচ্ছে বিআরটিএ’র সেবা
একই সঙ্গে প্রিন্ট হওয়া লাইসেন্স কার্ড প্যাকেজিং করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলা সার্কেল অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যিনি যে অফিসে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন তিনি সেই অফিস থেকে লাইসেন্স পাবেন।
মাহবুব-ই-রব্বানী বলেছেন, এগুলো প্রস্তুত হয়ে বিভিন্ন জেলায় সার্ভিস ডেলিভারি আউটলেটে পৌঁছাতে এবং আবেদনকারীদের হাতে দিতে তিন-চার দিন সময় তো লাগবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে পেন্ডিং সব লাইসেন্স দেওয়া শেষ করা যাবে।
বাংলাদেশে বিআরটিএ’র ৫৪টি মাঠ পর্যায়ের অফিস রয়েছে, যার অধীনে মোট ৭০টি সার্ভিস ডেলিভারি আউটলেট রয়েছে। এসব সার্ভিস ডেলিভারি আউটলেট থেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করা হবে।
কারিগরি জটিলতার কারণে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে চালকদের লাইসেন্স, যা কার্যত এক ধরনের ডিজিটাইজড স্মার্ট কার্ড- দেওয়া বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ১২ লাখ ৪৫ হাজার চালক লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন, যারা লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
বিআরটিএ বলছে, এ আবেদনের সবই পুরনো আবেদন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক অর্থাৎ ৫ লাখের মতো আবেদন করা হয়েছে ৬ মাস আগে।
এর আগে দুই দফায় স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাপার জন্য অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকার চুক্তি করলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা কাজ সম্পাদনে ব্যর্থ হয়।
সর্বশেষ ২০২১ সালের আগস্টের শেষে সেনাবাহিনীর অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি বিএমটিএফের সঙ্গে বিআরটিএ নতুন করে চুক্তি স্বাক্ষর করে।
এর পর স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড ছাপার কাজ শুরু হয়। বিএমটিএফের কারখানায় দিনে ৯ হাজারের বেশি লাইসেন্স ছাপানো হচ্ছে। তবে নতুন করে যারা ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করছেন, তাদের ক্ষেত্রে বাড়তি সময় লাগছে না বলে জানিয়েছে বিআরটিএ।
তাদের নির্ধারিত তারিখেই বায়োমেট্রিক দিয়ে যথাসময়ে স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, নতুন লাইসেন্স ছাপানোর কাজ বিএমটিএফ করছে না।