বিদ্যুতের দাম বাড়বে, বলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। কারণ পৃথিবীতে এ পর্যন্ত কোনো দেশই বিদ্যুতের দাম কমাতে পারেনি। বাংলাদেশ ট্রানজিশনে আছে, গ্রোথ আরও বেশি হবে। এজন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের গতি শ্লথ করার কোনো দরকার নেই, বরং বাড়ানো দরকার। তবে ব্যয় কমাতে আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে।
‘ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টাস বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় শনিবার তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা : স্থাপিত এবং সরবরাহ সক্ষমতা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এফইআরবি’র চেয়ারম্যান অরুন কর্মকার সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, উৎপাদন ক্ষমতা বেশি হওয়ার কারণে বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বেশি বলা হলেও এটি ঠিক না। কারণ পরিকল্পনা ও বাস্তবতায় বিশাল গ্যাপ থাকে। উন্নয়ন সহযোগীরাও ওভার প্ল্যানিং করার পরামর্শ দেন। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে ওভার প্ল্যানিং করা হয়েছিল। বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে ওভার প্ল্যানিং করলে সমস্যা নেই।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ম. তামিম। তিনি বলেন, গত এক দশকে বিদ্যুতের পারফরমেন্স ভাল। বিদ্যুৎ উৎপাদনে তিনি দুই, পাঁচ ও দশ বছর মেয়াদি পরিকল্পনায় যেতে বলেন। একইসঙ্গে ২০৫০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করতে বলেন।
তিনি বলেন, গরমকলে অতিরিক্ত সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে। শীত মৌসুমে ৪-৫ মাস এই চাহিদা কমে যায়। গরম আর শীতের এই গ্যাপটা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করতে হবে। বিদ্যুতের দাম কত বছরে কত শতাংশ বাড়বে তা বলা থাকলে বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এলএনজিকে গুরুত্ব দিতে হবে। দ্রুততম সময়ে এলএনজি আমদানি করতে হবে। কয়লাভিত্তিক তিনটি বড় বড় প্রকল্প হলে তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো বাদ যাবে।
বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, এখন বিদ্যুৎ আমদানির পরিবর্তে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ বাণিজ্যের কথা বলা হচ্ছে। আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বিনিময়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এটা করা হলে কম সময়ের নোটিশে বিদ্যুৎ কিনতে পারব। বাংলাদেশে শীতে বিদ্যুৎ বেচে যায়, সেটা অন্যের কাছে বিক্রি করা যাবে। বিদ্যুৎখাতে আরও কয়েক বছর বিনিয়োগের দাবি জানান বিদ্যুৎ সচিব। তিনি বলেন, বিতরণে না হোক, সঞ্চালনের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকে সংযুক্তির বিষয়টি এখন জোরোশোরে চিন্তা করা হচ্ছে।
ওয়েবিনারে আরও বক্তৃতা করেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম গোলাম কিবরিয়া, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওছার আমির আলী, ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) সভাপতি ইমরান করিম প্রমুখ।