বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে বেসরকারি ঋণ বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে আগামী বুধবার (২৯ জুলাই) ২০২০-২১ অর্থবছরের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এবারের মুদ্রানীতিকে বলা হবে প্রবৃদ্ধি ও অর্থনীতি সহায়ক। মহামারির কারণে এবার ভার্চুয়ালি মুদ্রানীতি ঘোষণা হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগে বছরে দুইবার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করত। ছয় মাস অন্তর এই মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে। কিন্তু গত বছর থেকে অর্থবছরের সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য বছরে দুবার নয়, একবার মুদ্রানীতি ঘোষণার নিয়ম চালু করা হয়েছে।
দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
এদিকে মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এরই মধ্যে নানা কর্মসূচি নিয়েছে। বিশেষ করে প্রণোদনার মাধ্যমে ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প, বড় শিল্প ও সেবা খাত, রফতানি ও কৃষিসহ সব পর্যায়ে উৎপাদন ঠিক রাখতে ঋণ জোগান বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য সরকারের সুদ ভর্তুকির আওতায় কম সুদে ঋণের জন্য কয়েকটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে। এসব তহবিল থেকে ঋণ বিতরণের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান ঠিক রাখা অন্যতম লক্ষ্য। এসব লক্ষ্য সামনে রেখে সরকার নির্ধারিত ৮.২০ শতাংশের কাছাকাছি জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন এবং মূল্যম্ফীতি ৫.৪০ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্যকে সামনে রেখে মুদ্রা সরবরাহ বাড়ানোর প্রাক্কলন করা হবে নতুন মুদ্রানীতিতে।
সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল ১৪.৮০ শতাংশ। কিন্ত তা অর্জন হয়েছে মাত্র ৮.৬১ শতাংশ। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬.৫০ শতাংশ। তবে শেষ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হয় ১১.২৯ শতাংশ। এর আগের অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৬.৯৫ শতাংশ।