ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে তিন থেকে ছয়মাস সময় দেওয়া হয়েছে। বাকি দুটি বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। সাময়িক সনদের মেয়াদ শেষ হওয়া এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ দেশের ১৮ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) এ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কমিশনের পত্রের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দেশের চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি ও ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তরিত না হওয়া পর্যন্ত সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে।
স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস ব্যতীত অস্থায়ী ক্যাম্পাসে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। তবে এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালিত প্রোগ্রামসমূহ যথারীতি চালু থাকবে।
কমিশনের পত্রে প্রেক্ষিতে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণের বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি বিবেচনায় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি, দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে আগামী ৩১ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
এ সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সব কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে ১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস ব্যতীত সব অস্থায়ী ক্যাম্পাস বা ভবনগুলো অবৈধ মর্মে বিবেচিত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণের বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি এবং লিখিত অঙ্গীকার বিবেচনায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি এবং দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটিকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে আগামী ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জুলাই ২০২৩ থেকে সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস ব্যতীত সব অস্থায়ী ক্যাম্পাস বা ভবনগুলো অবৈধ মর্মে বিবেচিত হবে।
গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাময়িক সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ ও স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়নি এমন বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২-এর মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের জন্য ১১ এপ্রিল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন নির্দেশনা দেয়। সেখানে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি থাকবে মর্মে বলা হয়েছিল।
জানা গেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১২ বছরের মধ্যে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া আইনের ১২(১) ধারায় কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে বা, ক্ষেত্রমত, নবায়নকরা সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করতে ব্যর্থ হলে, অথবা সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য ধারা ৯ এর কোনো শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে, এ সাময়িক অনুমতিপত্র বা, ক্ষেত্রমত, নবায়নকরা সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও শিক্ষা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে।