ভারত থেকে বেশ কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই নিষেধাজ্ঞায় নেপাল ও ভুটানেরও কিছু পণ্য রয়েছে। দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে টানাপোড়েনের মধ্যেই এ সিদ্ধান্ত নিলো বাংলাদেশ।
গত রোববার (১৩ এপ্রিল) প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করে এনবিআরের কাস্টমস উইং। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এ তথ্য জানায় এনবিআর।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এর পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অদৃশ্য টানাপোড়েন চলছে। এর প্রভাব পড়ছে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে।
এরই মধ্যে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত সরকার। ২০২০ সালের ২৯ জুন ভারত এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাংলাদেশকে দিয়েছিল, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারতীয় বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে সহজেই পণ্য পাঠাতে পারতো। এখন এই সুবিধা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। অর্থাৎ ভারতীয় বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে ট্রান্সশিপমেন্ট করতে পারবে না। তবে নেপাল-ভুটানে স্থলপথে ট্রানজিট নিয়ে পণ্য পাঠানোয় জটিলতা থাকছে না।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত এবং প্রক্রিয়াজাত সুতা ও আলু ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানি করা যাবে।
ভারত থেকে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া পণ্যগুলো হলো- ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, সিগারেট, পেপার, মাছ, সুতা, আলু, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, রেডিও-টিভি পার্টস, সাইকেল ও মোটর পার্টস, ফরমিকা শিট, সিরামিকওয়্যার, স্যানিটারিওয়্যার, স্টেইনলেস স্টিলওয়্যার, মার্বেল স্ল্যাব ও টাইলস এবং মিক্সড ফেব্রিক্স।
তবে মূসক নিবন্ধিত বিড়ি উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল হিসেবে তামাক ডাঁটা আমদানি করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।
একই সঙ্গে আগে জারি করা এসআরও নং ২৯৭-আইন/২০২৪/৮৯/কাস্টমস প্রজ্ঞাপনটির কয়েকটি ক্রমিক নম্বর সংশোধন করা হয়েছে। এতে পণ্য তালিকার হালনাগাদ করা হয় এবং ‘সব রপ্তানিযোগ্য পণ্য’ আগের মতোই অব্যাহত রাখা হয়েছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা এবং অবৈধ রি-এক্সপোর্ট বা রিরাউটিং রোধ করতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে টেক্সটাইল, কাগজ ও সিরামিক পণ্য খাতে দেশীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা রক্ষা করাই মূল উদ্দেশ্য।