হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পিসিওএস (পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম)-এর সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। পিসিওএস-এ ডিম্বাশয়ে প্রচুর পরিমাণে পুরুষ হরমোন অ্যান্ড্রোজেন নিঃসরণ হতে থাকে। এখান থেকেই ডিম্বাশয়ের ছোট-ছোট আকারে অনেকগুলো সিস্ট তৈরি হয়। পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে ১৫ থেকে ৪৫, প্রজনন বয়সকালে প্রায় ১৩ শতাংশ মহিলা ভোগেন। ওজন বেড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে অনিয়মিত ঋতুস্রাব, একাধিক উপসর্গ দেখা দেয় পিসিওএস-এ। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ভোগায় ব্রণ। পিসিওএস-এর ব্রণ সহজে যেতে যায় না। মূলত হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণেই মুখে ব্রণ হয়। পাশাপাশি চুল উঠতে থাকে।
পিসিওএস থাকলে শুধু মুখে ব্রণ হয় না। মুখের পাশাপাশি পিঠেও ব্রণ দেখা দেয়। তাছাড়া দু’গালে, থুতনিতে রোমের আধিক্য বেড়ে যায়। ব্রণ হওয়ার পাশাপাশি মুখে সেবাম উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যায়। পিসিওএস-এর ব্রণ হলে ত্বকে প্রদাহও বাড়ে। তাছাড়া হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে মানসিক চাপ ও স্ট্রেস বাড়ে। এই দু’টি বিষয়ও ব্রণর সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। যে সব মহিলাদের পিসিওস-এর সমস্যা রয়েছে, তাঁদের রক্তে শর্করার পরিমাণও বেশি থাকে। এটাও অনেক ক্ষেত্রে ব্রণর সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
পিসিওএস-এর ব্রণ দূর করবেন যে উপায়ে-
১) হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে ব্রণর সমস্যা বাড়ে। তাই চিকিৎসাধীন থাকা জরুরি। ওষুধের সাহায্যে আপনি অনিয়মিত ঋতুস্রাব ও ব্রণর সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
২) খাদ্যতালিকার উপর জোর দিন। ভিটামিন, ক্যালশিয়াম, প্রোটিন, আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি ডায়েটে রাখুন। এগুলো ত্বক ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন। বাড়ির তৈরি খাবার খান।
৩) নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। শরীরচর্চা করলে হরমোনের তারতম্য বজায় থাকবে। পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মানসিক চাপও কমবে। এই বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে থাকলে ব্রণও কমবে।
৪) বার বার মুখে হাত দেবেন না। ব্রণ খুঁটবেন না। এতে প্রদাহ ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বাড়বে।
৫) ত্বকের যত্ন নেওয়া ভীষণ জরুরি। প্রতিদিন দু’বেলা মুখ পরিষ্কার করুন। ক্লিনজিং, টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং—এই ৩ ধাপ মেনে চলুন। এতে ত্বক পরিষ্কার থাকে এবং ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
৬) ত্বকের যত্নে সঠিক প্রসাধনী ব্যবহার করুন। এমন কোনও পণ্য ব্যবহার করবেন না, যার জেরে ত্বকের সমস্যা আরও বাড়ে। পাশাপাশি এমন পণ্য বেছে নিন, যা ত্বকের সেবাম উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।