যে ৬টি রোগ সাইলেন্ট কিলার বা নীরব ঘাতক হিসাবে শরীরের ভেতরে ভেতরে নীরব অবস্থায় ক্ষতি করতে থাকে ওবং যে কোনো সময় গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। এমনকি তা আকস্মিক মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
যে ৬টি রোগ নিয়ে অনেকের সারাজীবন থাকতে হয়, এ ধরনের সমসা এড়াতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কোনো বিকল্প নেই। ভালো খাবার খাওয়া, স্বাস্থ্যকর রুটিন বজায় রাখা ও ব্যয়াম করার মাধ্যমে এমন দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত থাকা যেতে পারে।
তাই সতর্ক থাকতে জেনে নিন ৬ নীরব ঘাতক রোগ সম্পর্কে—
১. উচ্চ রক্তচাপ
উচ্চ রক্তচাপ রোগকে একটি নীরব ঘাতক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর কারণ হচ্ছে— এটি কোনো বিশেষ লক্ষণ ছাড়াই উদ্ভূত হয়। আর শরীরে ক্ষতি হওয়ার পরে এটির পরিস্থিতি গভীরতা বুঝতে পারা যায়। এটি হার্ট ও ধমনীতে প্রভাব ফেলার পাশাপাশি হার্টঅ্যাটাক, হার্ট ফেইলিউর, স্ট্রোক এবং আরও অনেক জটিল ও গুরুতর কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
২. করোনারি আর্টারি ডিজিজ
হৃদরোগের মধ্যে করোনারি আর্টারি ডিজিজ অন্যতম। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে হৃৎপিণ্ডে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহকারী করোনারি ধমনী সংকুচিত হয়ে যায়। আর এর ফলে বুকে ব্যথা (এনজাইনা) বা হার্টঅ্যাটাক হয় এবং এটিই প্রথম লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়।
এটি এতই মারাত্মক যে, এই রোগে আক্রান্ত একজন ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার সময়ও হার্ট ফেইলিওর এবং অ্যারিথমিয়া হতে পারে।
৩. ডায়াবেটিস
প্রাথমিকভাবে ডায়াবেটিস রোগের কোনো উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে। শুধু যখন রোগটি বেড়ে যায়, তখন এটি ক্লান্তি, ওজন হ্রাস, ঘন ঘন প্রস্রাব ও তৃষ্ণা বেশি লাগার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস হলে তা শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন হার্ট, কিডনি এবং আপনার দৃষ্টিশক্তিকে প্রভাবিত করতে পারে।
৪. অস্টিওপোরোসিস
অস্টিওপোরোসিস হচ্ছে একটি হাড়ের রোগ। আর এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই এটি হয়ে থাকলেও বুঝতে পারে না। কারণ এটি কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ ততক্ষণ পর্যন্ত দেখায় না; যতক্ষণ না কোনো ফ্র্যাকচারের ঘটনা ঘটে বা রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা করা হয়। এ কারণে একে নীরব ঘাতকও বলা হয়। হাড়ের ঘনত্বকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি, এটি মুখের স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করতে পারে।
৫. স্লিপ অ্যাপনিয়া
স্লিপ অ্যাপনিয়া হচ্ছে এমন একটি গুরুতর ঘুমের ব্যাধি যেটিতে ঘুমের সময় জোরে শ্বাস নেওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া এটি জোরে নাক ডাকা, দিনের বেলা চরম ক্লান্তি এবং রাতে ঘুম না হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। গুরুতর স্লিপ অ্যাপনিয়ার রোগীরা ঘুমের সময় আকস্মিক মৃত্যু এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। আর এ রোগটি হলে অনেকে বুঝতেই পারেন না। এ কারণে এটিকে নীরব ঘাতক বলা হয়।
৬. ফ্যাটি লিভার
শরীরে ফ্যাটি লিভার রোগটির বৃদ্ধি ধীরে ধীরে হয় এবং প্রাথমিকভাবে এর কোনো উল্লেখযোগ্য চিহ্ন দেখা যায় না। এ কারণে এটি শরীরে নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে। এ রোগটি হলে তার শেষ পর্যায়ে সিরোসিস হতে পারে এবং যকৃতের দাগ (ফাইব্রোসিস) এর চূড়ান্ত পর্যায়ে যেতে পারে।