রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

রাতে দেরিতেে খেলে শুধু ওজনই বাড়ে না সৃষ্টি করে নানা জটিলতা

প্রকাশঃ

রাতে বেশি দেরি করে খেলে শুধু ওজনই বাড়ে না। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির পেরেলমান স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকদের এক গবেষণায় এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। গবেষণায় তারা দেখেছেন, রাতে দেরিতে খাওয়ার কারণে গ্লুকোজ ও ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়, এ দুটোই টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী।

গবেষকরা আরও দেখেছেন, অসময়ে খাবার গ্রহণ কোলেস্টেরলের মাত্রায়ও প্রভাব ফেলে, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে কখনো কখনো হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে।

৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক সঠিক ওজনের মানুষের ওপর গবেষণা করে গবেষকরা এই তথ্য দিয়েছেন। অংশগ্রহণকারীদের আট সপ্তাহ ধরে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে তিনবেলা খাবার এবং দুই বেলা নাস্তা করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। একইভাবে পরের আট সপ্তাহেও তাদের দুপুর এবং রাত ১১টার মধ্যে খাবারের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তবে উভয় সপ্তাহে গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের রাত ১১টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘুমাতে বলেছিলেন।

নির্দিষ্ট সময় পর গবেষকরা দেখতে পান, যেসব অংশগ্রহণকারী বেশি রাত করে খাবার খেয়েছেন তাদের ওজন শুধু বাড়েনি, একই সঙ্গে তাদের ইনসুলিন, গ্লুকোজ এবং কোলেস্টেরলোর মাত্রাও বেড়ে গিয়েছিল। গবেষকরা আরও দেখেছেন, প্রথম আট সপ্তাহে দিনের বেলা খাবারে অংশগ্রহণকারীদের শরীরে এমন একটি হরমোন তৈরি হয়েছিল যেটি তাদের ক্ষুধা দূর করে দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করেছিল।

গবেষকদের প্রধান নামনি গোয়েল বলেন, সকাল বেলা খাবার খাওয়া ও ঘুম নিয়ন্ত্রণের অনেক সুবিধা আছে। অন্যদিকে দেরিতে খেলে তা ওজনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। একই সঙ্গে শরীরে গ্লুকোজ ও ইনসুলিনও বেড়ে যায়, যা ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী। আবার কোলেস্টেরল এবং ট্রিগ্লিসারিড বেড়ে গেলে তা হৃদযন্ত্রের সমস্যা ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করে।

এ ক্ষেত্রে রাতে দেরিতে খাওয়া এড়াতে গবেষকদের পাঁচটি কারণের কথা টেলিগ্রাফ অবলম্বনে তুলে ধরা হলো-

মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে

গবেষকদের মতে, রাতে দেরিতে খাবার খেলে তা মস্তিষ্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ক্যালিফোর্ণিয়া ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, অসময়ে খাবার খেলে তা মস্তিষ্কের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়। ইঁদুরের ওপর গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা এর প্রমাণ পান।

দুঃস্বপ্ন দেখা

২০১৫ সালের এক গবেষণায় কানাডার মনস্তাত্ত্বিকরা দেখেছেন, মানুষের খাদ্যাভাস তার ঘুমানোর ধরন ও স্বপ্নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ গবেষণায় কমপক্ষে ৪০০ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাদের খাবার, ঘুমানো ও স্বপ্নের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে বলা হয়। এতে গবেষকরা দেখেছেন, যারা দেরি করে খাবার খেয়েছেন তারা দুঃস্বপ্ন বেশি দেখেছেন।

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়

গবেষকরা দেখেছেন, রাত ৭টার পর রাতের খাবার খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তুরস্কের ডকুস আইলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষণায় ৭০০ উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। গবেষণায় গবেষকরা দেখেন, যারা রাতে দেরি করে খাবার খেয়েছেন তাদের উচ্চ রক্তচাপ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে।

গ্যাসের সমস্যা বাড়ায়

গবেষকরা বলেন, রাতে দেরি করে ভারি খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলে গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যায়। কারণ আপনার পেট খাবার হজম করার জন্য যথেষ্ট সময় পায় না। এতে ভালো ঘুমও হয় না।

ক্ষুধা বাড়ায়

রাতের খাবার দেরিতে খেলে পরের দিন স্বাভাবিকভাবেই বেশি ক্ষুধা অনুভূত হয়। এর অন্যতম কারণ হলো শরীরের গ্লুকোজ গ্রেলিন নামে এমন এক ধরনের হরমোন সৃষ্টি করে যা ক্ষুধা বাড়ায়। এর ফলে ওজনও বাড়ে।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ