যেকোনো শুষ্ক আবহাওয়ায় বিশেষ করে শীতকালে শরীরের ত্বকে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে আসে। তখন তৈরি হয় পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়ার প্রবণতা।
শরীরের সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে পায়ের গোড়ালিতে। আর তাইতো পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়। এছাড়াও শুষ্ক আবহাওয়াতে পায়ের গোড়ালি বাইরে থাকে। যে কারণেও পায়ের গোড়ালি ফাটতে পারে। রাস্তার ধূলাবালি বা মাটির সংস্পর্শেও অনেক সময় গোড়ালি ফাটে। গোড়ালি ফাটা খুবই কষ্টকর।
অনেক সময় রক্ত পর্যন্ত পড়ে। এর পেছনে রয়েছে সচেতনভাবে পায়ের ত্বকের যত্নের অভাব। এই অভাব খুব সহজেই দূর করা যায় ঘরোয়া উপায়। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে-
পায়ের গোড়ালি ফাটার কারণ:
> শরীরে ভিটামিনের অভাব হলে পা ফেটে থাকে। মানব দেহে ক্যালসিয়াম, জিংক ও আয়রনের ঘাটতি পা ফাটার অন্যতম কারণ।
> মানবদেহে পানিশূন্যতার কারণে পা ফাটতে দেখা যায়। পানিশূন্যতা দূর করতে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন।
> খুব বেশি গরম পানিতে গোসল, ধুলা-বালি, দীর্ঘদিন ধরে পায়ের যত্নের অভাব, অপরিচ্ছন্ন জুতা পরা , অতিরিক্ত পুষ্টির অভাব।
> ডায়বেটিস রোগীদের স্নায়ুজনিত সমস্যা তৈরির ফলে পায়ের আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। ফলে পা ফাটা হতে পারে।
> অল্প ফেটে গেছে এমন জায়গার চামড়াকে জোরে জোরে টেনে তোলা বা ছিঁড়ে দেয়া।
> অনেকে আবার পা ফাটা সমস্যা জেনেটিক ভাবে পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ বাবা, চাচা,মা কারো এই সমস্যা থাকলে ছেলে -মেয়েরা ও বংশ পরম্পরায় পেয়ে থাকে।
> পা প্রতিদিন পরিষ্কার না করা, ভ্যাসলিন বা ময়েশ্চার ব্যবহারের পরে তা সঠিকভাবে পরিষ্কার না করে আবার লোশন, ক্রিম বা ময়েশ্চার ব্যবহার করা।
পায়ের গোড়ালি ফাটা হাত থেকে বাঁচার উপায়:
১। মধু পায়ের যত্নে অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। এক বালতি হালকা গরম পানিতে এক কাপ মধু মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মিশ্রণ দিয়ে পায়ে ম্যাসাজ করুন ২০ মিনিট। তারপর পা-ঘষার পাথর দিয়ে শক্ত চামড়া ঘষে পরিষ্কার করে নিন। এতে অনেক উপকার পাবেন।
২। অ্যালোভেরায় বিটামিন এ, সি ও ই থাকে। এই কারণে ত্বকের জন্য অ্যালোভেরার জেল খুবই কার্যকরী। হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে, পা-ঘষার পাথর দিয়ে গোড়ালি ঘষে পরিষ্কার করে নিন। তারপর মোটা করে এই জেল লাগান পায়ের তলায়। এরপর মোজা পরে শুয়ে থাকুন। সকালে উঠে হালকা গরম পানিতে পা ধুয়ে নিন।
৩। ভ্যাসলিন এর সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে সারা রাত পায়ে লাগিয়ে রাখুন। ফলে পায়ের গোড়ালি ফাটা দূর হবে ও পা নরম মসৃণ হয়ে যাবে।
৪। হালকা গরম পানিতে তিন চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। সেই মিশ্রণে পা ডুবিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। এরপর পানি থেকে পা তুলে পা-ঘষার পাথর দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিন।
৫। অলিভ অয়েল, তিলের তেল, নারকেল তেল, সরষের তেল ও বাদাম তেল পা ফাটার ভালো একটি সমাধান। রাতে যে কোনো একটি ভেজিটেবল তেল লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে পা ফাটা অনেকটাই কমে যাবে।