শেয়ারবাজারে চলমান ভয়াবহ দরপতনের প্রেক্ষিতে আবার ফ্লোর প্রাইস (দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা) ফিরিয়ে এনেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ ও আগের চারদিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড় দাম হবে প্রতিটি সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সই করা এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। আগামী কার্যদিবস বা রোববার থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, ফ্লোর প্রাইসেও ওপরে সিকিউরিটিজের দাম স্বাভাবিক হারে ওঠা-নামা করতে পারবে। তবে কোনো সিকিউরিটিজের দাম ফ্লোর প্রাইসের নিচে নামতে পারবে না। অবশ্য কোম্পানির বোনাস শেয়ার বা রাইট শেয়ারের কারণে ফ্লোর প্রাইসে থাকা সিকিউরিটিজের দাম সমন্বয় হবে।
নতুন তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, প্রথমদিনের লেনদেনের ক্লোজিং প্রাইসকে ফ্লোর প্রাইস হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
ঈদের পর শেয়াবাজারে টানা ৯ কার্যদিবস দরপতন হলে পতন ঠেকাতে সোমবার (২৫ জুলাই) ৩০ জন বড় বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠক করে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।
বিএসইসির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আশ্বাস দেন বড় বিনিয়োগকারীরা। সেই সঙ্গে বড় বিনিয়োগকারীরা মার্কেট মেকারের ভূমিকা পালন করবেন বলে কথা দেন।
বিএসইসি বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে এমন খবরে টানা ৯ কার্যদিবস দরপতনের পর সোমবার শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। বৈঠকের পরের দিন মঙ্গলবারও ঊর্ধ্বমুখী থাকে বাজার। অবশ্য মঙ্গলবার লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ১০৩ পয়েন্ট বাড়লেও লেনদেন শেষে সূচকটি বাড়ে ২৯ পয়েন্ট।
এরপর বুধবার শেয়ারবাজারে আবার বড় দরপতন হয়। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৪ পয়েন্ট কমে যায়। বৃহস্পতিবারও শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। এদিন ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৫৭ পয়েন্ট। শেয়ারবাজার এমন দরপতনের মধ্যে পতিত হওয়ায় আবার ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দিলো নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এরআগে ২০২০ সালে দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। সেই ধস ঠেকাতে ওই বছরের ১৯ মার্চ প্রতিটি সিকিউরিটিজের ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দিয়েছিল সেসময়ের কমিশন।
বিএসইসির বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নিয়ে ৩ ধাপে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়। প্রথম দফায় ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ৬৬টি কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। এরপরে ওই বছরের ৩ জুন ৩০ কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। তৃতীয় ধাপে ১৭ জুন শেয়ারবাজার থেকে পুরোপুরি ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়।