আমানতের সুদ ৬ শতাংশে নামাসহ প্রণোদনা ও এসএমই ঋণ, বৈদেশিক বাণিজ্য, ট্রেজারি বন্ডে ভালো ব্যবসা হওয়ায় ব্যাংকগুলোর মুনাফা বেড়েছে।নতুন বিনিয়োগ না থাকলেও চলতি ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ব্যাংকগুলো আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি পরিচালন মুনাফা করেছে। বলা যায়, ব্যাংকগুলো পরিচালন মুনাফায় একরকম চমকই দেখিয়েছে।
অবশ্য পরিচালন মুনাফা ব্যাংকের জন্য চূড়ান্ত কিছু নয়। কারণ, এই মুনাফা থেকে ঋণের মান অনুযায়ী নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) রাখতে হয়। এরপর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ করপোরেট কর দিতে হবে। এরপরই চূড়ান্ত হবে নিট মুনাফা। এদিকে আমানতের সুদহার কমে ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। প্রণোদনার ঋণ ও ক্ষুদ্র-মাঝারি খাতের (এসএমই) ঋণে ব্যাংকগুলো আগের বছরের চেয়ে ভালো ব্যবসা করছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারেও ভালো ব্যবসা হয়েছে তাদের। ফলে চূড়ান্ত হিসাব হলেও ব্যাংকগুলোর মুনাফা আগের চেয়ে বাড়বে বলে আশা করছে তারা।
ব্যাংকগুলো থেকে পরিচালন মুনাফার যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তার কোনোটাই আনুষ্ঠানিক নয়। অনেক ব্যাংকই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত। এই অনানুষ্ঠানিক তথ্যের প্রভাব শেয়ারবাজারেও পড়তে পারে।জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আলম খান চৌধুরী বলেন, ‘এই বছরে বৈদেশিক বাণিজ্যে ভালো ব্যবসা হয়েছে। যারা আগে ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করেছিল, তারা ভালো মুনাফা পাচ্ছে। ওই মুনাফায় কর নেই, তা থেকে আলাদা প্রভিশনও রাখতে হয় না। এ ছাড়া শেয়ারবাজার থেকেও আয় বেড়েছে। এ ছাড়া ঋণ নতুন করে খেলাপি না হওয়ায় ব্যাংকের খরচ কমেছে। সব মিলিয়ে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে আমাদের ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে। অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে যাদের মুনাফা বেড়েছে, তাদেরও একই ধরনের ব্যবসা বেড়েছে।’
গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় এবার একই সময়ে তাদের মুনাফা বৃদ্ধির একটি চিত্র পাওয়া গেছে। তাতে দেখা যায়, চলতি বছরে সাউথইস্ট ব্যাংকের ১৩০ কোটি টাকা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১১৫ কোটি টাকা, পূবালী ব্যাংকের ১০২ কোটি টাকা মুনাফা বেড়েছে।এ ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১১৫ কোটি টাকা, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ৫৯ কোটি টাকা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৫২ কোটি টাকা, ইসলামী ব্যাংকের ১৩ কোটি টাকা, সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ১০ কোটি টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের ১৬২ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়ার ১৩৩ কোটি টাকা, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ৮৭ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ৪৭ কোটি টাকা, যমুনা ব্যাংকের ৩৯ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ৩৩ কোটি টাকা, এনসিসি ব্যাংকের ৩৮ কোটি টাকা, মেঘনা ব্যাংকের ৫৮ কোটি টাকা, ওয়ান ব্যাংকের ৫৭ কোটি টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৭৮ কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংকের ২৩ কোটি টাকা, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৫ কোটি টাকা, মধুমতি ব্যাংকের ৩ কোটি টাকা ।