৬ জানুয়ারী ২০২০, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অতিক্রম করছে সাফল্যগাঁথা ২০০০তম দিন। ১৭ জুলাই ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের বিমান পরিবহন শিল্পে একের পর এক অনন্য নজির স্থাপন করে চলেছে, অর্জন করেছে সাফল্যের মাইলফলক।
বাংলাদেশ তথা সারাবিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক এভিয়েশন ব্যবসায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরু করেছিল আজ থেকে ঠিক ২০০০ দিন পূর্বে ৭৬ আসন বিশিষ্ট দু’টি কানাডার বোম্বারডিয়ার তৈরী ড্যাশ৮-কিউ৪০০ সিরিজের এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে। শুরু থেকেই নিজস্ব ক্যাটারিং, নিজস্ব টেইলারিংসহ ইন-হাউজ ট্রেনিং সুবিধা, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইন-ফ্লাইট সার্ভিস, যা যাত্রী সাধারনের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সকল চালু বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে সারা দেশের জনগনকে স্বল্পতম সময়ে আকাশপথের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল, রাজশাহী রুটে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরুর দু’বছরের মধ্যে ১৫ মে ২০১৬ তারিখে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্যেমে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ঢাকা থেকে কলকাতা, চেন্নাই, মাস্কাট, দোহা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও গুয়াংজু রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা, চেন্নাই, দোহা ও মাস্কাট রুটে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা।
স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৪৯ বছরে বাংলাদেশের বিমান পরিবহনে ইউএস-বাংলাই একমাত্র বিমান সংস্থা যা, চীনের কোনো গন্তব্য গুয়াংজু ও ভারতের চেন্নাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার কারনে দেশের ব্যবসায়ী সমাজের কাছে খুবই প্রশংসিত হয়েছে ইউএস-বাংলা। এছাড়া চেন্নাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনার কারনে চেন্নাই ও ভেল্লোরে উন্নত চিকিৎসা সুবিধা নিতে যাতায়াত করতে পারছে বাংলাদেশী নাগরিকরা।
বর্তমানে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, চারটি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর৭২-৬০০ ও তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে। এ মাসের মধ্যে বিমান বহরে আরো দু’টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট যুক্ত হতে চলেছে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বহরে এ বছরের জুন নাগাদ মোট দশটি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রয়েছে নিজস্ব ইন-ফ্লাইট ম্যাগাজিন “ব্লু স্কাই”। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সকল এয়ারক্রাফট সম্পূর্ণরূপে ধূমপানমুক্ত। বর্তমানে সপ্তাহে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ৪০০টির অধিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়। গত ২০০০ দিনে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর শতকরা প্রায় ৯০ ভাগের অধিক অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড রয়েছে। অভ্যন্তরীণ রুটে মোট যাত্রী সংখ্যার ৪০ ভাগের অধিক যাত্রী বহন করছে ইউএস-বাংলা।
যাত্রীসেবার অনন্য নজির স্থাপন করায় স্বীকৃতিস্বরূপ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে সেরা এয়ারলাইন্স এর মুকুট অর্জন করতে পেরেছে। দেশে-বিদেশে বর্তমানে প্রায় ১৫০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে। যা দেশের বেকার সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে। নিয়মিত ট্যাক্স-সারচার্জ পরিশোধ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখে চলেছে। সাথে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করে চলেছে। বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে করছে আরো সূদৃঢ়।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর ২০০০তম দিনের চলার পথে এ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত সকল ট্রাভেল এজেন্ট ব্যবসাকেও করেছে সুসংহত। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় দু’হাজার পাঁচশত ট্রাভেল এজেন্ট রয়েছে ইউএস-বাংলার সাথে যা সময়ের হিসেবে সত্যিই অকল্পনীয়। সাথে রয়েছে বাংলাদেশের স্বনামধণ্য সকল কর্পোরেট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহ। ইউএস-বাংলার টিকেট সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে অন-লাইন বুকিং সুবিধা। হোম ডেলিভারী সুবিধাও রয়েছে। সারাদেশে নিজস্ব ৩০টি সেলস্ অফিস। এছাড়া কলকাতা, চেন্নাই, মাস্কাট, দোহা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, গুয়াংজু, কানাডা, নিউইয়র্ক এ নিজস্ব সেলস্ অফিস। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে স্কাইস্টার প্যাকেজ। যার মাধ্যমে শুধু টিকেটেই সুবিধা পাবে না বরং যাত্রীরা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ সুবিধাও পেয়ে থাকে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদেরকে বেশ কয়েকটি সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা, যা অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভিয়েশন শিল্পে। উল্লেখযোগ্য সার্ভিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরনের পর ১৫ মিনিটে ল্যাগেজ ডেলিভারী, ওয়েজ আর্নার্সদের জন্য বিমানবন্দরে প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ২০% মূল্যছাড়, সামরিকবাহিনীর কর্মকর্তা ও গলফারদের রয়েছে ১০% মূল্যছাড়সহ আরো নানাবিধ যাত্রীসুবিধা।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স শুধু যাত্রীই পরিবহন করে না সাথে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে কার্গোও পরিবহন করে থাকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স দেশের বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খেলাধূলার উন্নয়নের সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন ২০০০তম দিন অতিক্রম করা উপলক্ষে বলেন, “ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সাফল্যে ভরা ২০০০তম দিন অতিক্রম করার সাথে যেসকল সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্ট, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন কর্পোরেট অফিস, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ, সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত যেসকল কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।”