শনিবার, ২৩শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেড়েছে ৭.৭ ডিগ্রি

প্রকাশঃ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দিন দিন আবহাওয়া, পরিবেশ-প্রতিবেশ বিরূপ হয়ে উঠছে। তাপমাত্রাও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। দিনের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ যে তাপমাত্রা থাকার কথা, তা ছাড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিদিনই। চলতি এপ্রিল মাসে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। অধিকাংশ অঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিই অস্বাভাবিক। এপ্রিলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে সর্বনিম্ন ৩ দমমিক ৯ ডিগ্রি থেকে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের ১ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত রেকর্ড হওয়া তাপমাত্রা বিশ্লেষণে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র মতে, দিন-রাতের ২৪ ঘণ্টায় সবসময় তাপমাত্রা এক রকম থাকে না। সূর্য ডোবার পর থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। ভোররাতে সূর্য ওঠার আগ মুহূর্তে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। সূর্যোদয়ের পর থেকে আবার তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। দুপুর ৩টার দিকে এসে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। অনাবৃষ্টির কারণে এবার তাপমাত্রা বাড়ছেই। সাধারণত বিগত ৩০ বছরে যে পরিমাণ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে, তাকে দিনের ‘স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা’ বলা হয়।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে এপ্রিল মাসে স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঢাকায় ৩৩.৭, ময়মনসিংহে ৩২.৩, টাঙ্গাইলে ৩৩.৯, ফরিদপুরে ৩৪.২, মাদারীপুরে ৩৪.১, চট্টগ্রামে ৩১.৮, সন্দ্বীপে ৩১.২, সীতাকুণ্ডে ৩১.৯, রাঙামাটিতে ৩৩, কুমিল্লায় ৩২.২, চাঁদপুরে ৩২.৮, মাইজদীকোর্টে ৩২.৩, ফেনীতে ৩২.২, হাতিয়ায় ৩২, কক্সবাজারে ৩২.১, কুতুবদিয়ায় ৩১.৫, টেকনাফে ৩১.৯, সিলেটে ৩০.৮, শ্রীমঙ্গলে ৩২.৯, রাজশাহীতে ৩৫.৭, ঈশ্বরদীতে ৩৫.৮, বগুড়ায় ৩৪.৩, রংপুরে ৩২.২, দিনাজপুরে ৩৩.৩, সৈয়দপুরে ৩৩, খুলনায় ৩৪.৬, মোংলায় ৩৪.৪, সাতক্ষীরায় ৩৫.২, যশোরে ৩৫.৬, চুয়াডাঙ্গায় ৩৬.৩, বরিশালে ৩৩.৪, পটুয়াখালীতে ৩৩, খেপুপাড়ায় ৩২.৬ এবং ভোলায় ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গড়ে বাংলাদেশে এপ্রিলে স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

অথচ চলতি বছর এপ্রিলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৫ এপ্রিল ঢাকায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, টাঙ্গাইলে ৩৮.৫, ফরিদপুরে ৩৮.৯, মাদারীপুরে ৩৯.৬, গোপালগঞ্জে ৩৯.৫, চট্টগ্রামে ৩৭, সন্দ্বীপে ৩৮.৫, সীতাকুণ্ডে ৩৯.৬, রাঙ্গামাটিতে ৩৯.৫, কুমিল্লায় ৩৮.৮, চাঁদপুরে ৩৮.৬, মাইজদীকোর্টে ৩৮.৫, হাতিয়ায় ৩৮, কক্সবাজারে ৩৬.৮, টেকনাফে ৩৫.৮, রাজশাহীতে ৪০.৩, বগুড়ায় ৩৮.২, সৈয়দপুরে ৩৭.২, খুলনায় ৪০.২, মোংলায় ৩৯.৬, সাতক্ষীরায় ৩৯.২, যশোরে ২৫ এপ্রিল ৪১.২, চুয়াডাঙ্গায় ৪০.৫, বরিশালে ৩৮.৮, পটুয়াখালীতে ৩৯, খেপুপাড়ায় ৩৯.৯ ও ভোলায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আর ২৬ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ময়মনসিংহে ৩৭, ফেনীতে ৩৯, সিলেটে ৩৭.৫, শ্রীমঙ্গলে ৩৮.৮ ও রংপুরে ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২৪ এপ্রিল কুতুবদিয়ায় ৩৫.৫, ২০ এপ্রিল ঈশ্বরদীতে ৪০ ও ১১ এপ্রিল দিনাজপুরে ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

হিসাব কষলে দেখা যায়, এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি রেকর্ড হয়েছে সীতাকুণ্ডে ৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ঢাকায় ৫.৮, ময়মনসিংহে ৪.৭, টাঙ্গাইলে ৪.৬, ফরিদপুরে ৪.৭, মাদারীপুরে ৫.৫, চট্টগ্রামে ৫.২, সন্দ্বীপে ৭.৩, রাঙামাটিতে ৬.৫, কুমিল্লায় ৬.৬, চাঁদপুরে ৫.৮, মাইজদীকোর্টে ৬.২, ফেনীতে ৬.৮, হাতিয়ায় ৬, কক্সবাজারে ৪.৭, কুতুবদিয়ায় ৪, টেকনাফে ৩.৯, সিলেটে ৬.৮, শ্রীমঙ্গলে ৫.৯, রাজশাহীতে ৪.৬, ঈশ্বরদীতে ৪.২, বগুড়ায় ৩.৯, রংপুরে ৪, দিনাজপুরে ৪, সৈয়দপুরে ৪.২, খুলনায় ৫.৬, মোংলায় ৫.২, সাতক্ষীরায় ৪, যশোরে ৫.৬, চুয়াডাঙ্গায় ৪.২, বরিশালে ৫.৪, পটুয়াখালীতে ৬, খেপুপাড়ায় ৭.৩ এবং ভোলায় ৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রেকর্ড হয়েছে।আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক বলেছেন, ‘দেশে এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। মার্চ ও এপ্রিল মাসেও বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়েও কম হয়েছে।’

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমানের মতামতও একই তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে এপ্রিলে তাপমাত্রা তীব্র হচ্ছে।’
বাতাসে দূষিত কণার পরিমাণ বেশি থাকলেও গরম অনুভব বেশি হয়। গরম থেকে রেহাই পেতে এয়ারকন্ডিশনার, এয়ারকুলার ব্যবহার করা হয়। এগুলো ঘরের তাপমাত্রাকে কমিয়ে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রাকে বৃদ্ধি করে।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ