বুধবার, ২১শে মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট স্টারলিংকের সেবা শুরু বাংলাদেশে

প্রকাশঃ

স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবায় কোনো স্পিড বা ডেটা লিমিট নেই। ব্যবহারকারী ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতির আনলিমিটেড ডেটা সুবিধা পাবেন।

স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবার কোম্পানি স্টারলিংক বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে সেবা শুরু করেছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এক ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, বাংলাদেশের গ্রাহকরা মঙ্গলবার থেকেই স্টারলিংক ইন্টারনেট সংযোগের অর্ডার করতে পারবেন।

স্টারলিংক শুরুতে দুটি প্যাকেজ দিয়ে বাংলাদেশে সেবা শুরু করছে- স্টারলিংক রেসিডেন্স এবং রেসিডেন্স লাইট। মাসিক খরচ একটিতে ৬০০০ টাকা, অন্যটিতে ৪২০০ টাকা। তবে সেটআপ যন্ত্রপাতির জন্য ৪৭ হাজার টাকা এককালীন খরচ হবে।

স্যাটেলাইটভিত্তিক এই ইন্টারনেট সেবায় কোনো স্পিড বা ডেটা লিমিট নেই। ব্যবহারকারী ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতির আনলিমিটেড ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের মধ্যে ফোনালাপ হয়। সেই আলোচনার সূত্রে বাংলাদেশে স্টারলিংকের সেবা চালুর উদ্যোগ শুরু হয়।

এরপর ৯ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, বাংলাদেশে ‘গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন’ স্থাপনের ব্যাপারে স্টারলিংকের হয়ে কয়েকটি স্থানীয় কোম্পানি কাজ শুরু করেছে।

এর মধ্যে ভূমি বরাদ্দ, নির্মাণ সহায়তা ও অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের মত কার্যক্রম পরিচালনায় স্টারলিংকের সঙ্গে কয়েকটি সহযোগিতা চুক্তি করে সরকার।

বিনিয়োগ সম্মেলনের তৃতীয় দিন ৯ এপ্রিল সম্মেলনের ভেন্যু হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পরীক্ষামূলকভাবে স্টারলিংকের সেবা চালিয়ে দেখানো হয়। বাংলাদেশে বাণিজ্যিক কাযক্রম শুরুর জন্য ২৮ এপ্রিল স্টারলিংকের লাইসেন্সে অনুমোদন দেন প্রধান উপদেষ্টা।

বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার জন্য ১০ বছর মেয়াদী দুটি লাইসেন্স পেয়েছে স্টারলিংক। এর একটি হচ্ছে ‘ননজিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট অপারেটর লাইসেন্স’; অন্যটি ‘রেডিও কমিউনিকেশন অ্যাপারেটার্স লাইসেন্স’। লাইসেন্স পাওয়ার এক মাসের মধ্যে তারা বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করল।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, সোমবার বিকালেই স্টারলিংক তাকে ফোন করে বাংলাদেশে অফিসিয়ালি যাত্রা শুরুর কথা জানায়। আর মঙ্গলবার সকালে স্টারলিংকের এক্স হ্যান্ডেলেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা গত ২৯ মার্চ বাংলাদেশে ৯০ দিনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালুর নির্দেশ দিয়েছিলেন।

সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তার বিশেষ সহকারী তৈয়্যব লিখেছেন, “৯০ দিনের মধ্যে যাত্রা শুরুতে স্যারের প্রত্যাশাটি বাস্তবায়িত হল।”

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনা সরকার টানা কয়েকদিন সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখায় বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট চালুর মাধ্যমে ভবিষ্যতে ইন্টারনেট বন্ধের সুযোগ পুরোপুরি বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে ইউনূস সরকার।

পাশাপাশি বাংলাদেশের দুর্গম এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন এবং মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা স্যাটেলাইন ইন্টারনেট চালুর ওপর জোর দিয়ে আসছিলেন।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলে আসছিলেন, স্টারলিংক বাংলাদেশের মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করবে। এর মাধ্যমে ভয়েস কল ও ডেটা বান্ডেল ভিত্তিক গতানুগতিক ইন্টারনেট সেবাদান ব্যবস্থা ডিজিটাল সার্ভিসকেন্দ্রিক নতুন রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাবে।

মঙ্গলবার সকালেরি ফেইসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “খরুচে হলেও এর মাধ্যমে প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য উচ্চমান এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তির টেকসই বিকল্প তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি যেসব এলাকায় এখনো ফাইবার কিংবা দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছেনি, সেখানে কোম্পানিগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণ এর সুযোগ পাবেন, এনজিও ফ্রিল্যান্সার এবং উদ্যোক্তারা বছরব্যাপী নিরবিচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেটের নিশ্চয়তা পাবেন।”

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ