‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনির মাধ্যমে আজ (২৮ জুলাই) রাত থেকে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। দীর্ঘ ৯০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম সৌদি আরবের বাইরের কোনো দেশ থেকে হজে অংশগ্রহণ করতে পারছে না কেউ। বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আগামী পরশু দিন পালিত হবে পবিত্র হজ। এ সময় হজ পালনকারীদের ইসলাম নির্দেশিত বেশকিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। মিকাতের আগে বা মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধার পর হজযাত্রীদের সর্বাবস্থায় বারবার তালবিয়া বা লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক পাঠ করতে হয়।
জানা গেছে, ব্যতিক্রমী এই হজে মাত্র এক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিক হলেও আগে থেকে সৌদি আরবের বাসিন্দা। এবার মোট এক হাজার লোক হজে অংশ নিলেও তাঁদের মাত্র ৩০ ভাগ সৌদির নিজস্ব নাগরিক।
গত দুদিনে তাঁরা সবাই মক্কায় এসে হাজির হয়েছেন। তাঁদের কণ্ঠে ছিল-মহান আল্লাহর পবিত্র ঘর কাবা শরিফে হাজির হওয়ার ফজিলতের সেই দোয়া- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক।’ বেশির ভাগই মক্কা থেকে মোয়াল্লেমের বাসে করে মিনায় যাবেন।
এদিকে জমজমের পানি বোতলে করে সরবরাহ করা হবে হাজিদের। তবে করোনার কারণে ছোঁয়া যাবে না কাবাঘর, কালো পাথরে চুমু খাওয়াও এবার নিষিদ্ধ। নামাজ পড়ার জন্য আনতে হবে নিজস্ব জায়নামাজ।
মূলত মক্কা থেকে মিনার মাঠে পৌঁছার মাধ্যমেই শুরু হয় হজের আনুষ্ঠানিকতা। প্রতিবছর হজের দুই দিন আগে অর্থাৎ ৭ জিলহজ দিবাগত সন্ধ্যায় মক্কা থেকে মিনার মাঠের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন হজযাত্রীরা। পরের দিন ৮ জিলহজ সারা দিন মিনার মাঠে তাঁরা নিজ নিজ তাঁবুতে কাটাবেন। আগামীকাল বুধবার সারা দিন অবস্থানের পর বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ আদায় শেষে আরাফাতের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সাধারণত হজযাত্রীরা নিজস্ব মোয়াল্লেমের ব্যবস্থাপনায় পাঠানো বাসে মিনার মাঠ থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরের আরাফাতের ময়দানে পৌঁছে থাকেন। ফজর থেকে তাদের যাত্রা শুরু হয়। চলে দুপুর পর্যন্ত।
হজযাত্রীরা আল্লাহর প্রেমে উন্মাদের মতো ছুটেন আরাফাতের মাঠে। তাঁদের সঙ্গে থাকে শুধু একটি ব্যাগ-যাতে রাখা হয় কিছু অতীব জরুরি কিছু জিনিসপত্র। যেমন থালা-বাসন, পানির মগ, ওষুধ ও ওজু-গোসলের জন্য গামছা জাতীয় কাপড়। মূলত আরাফাতের ময়দানে ৯ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করাই হজের মূল কাজ।
উল্লেখ্য, এবারের হজে হাজিদের সব খরচ দিচ্ছে সৌদি সরকার। হজের দ্বিতীয় দিন আরাফাতের ময়দানের খুতবা বাংলাসহ ১০টি ভাষায় অনূদিত হবে।