‘হাওয়াই মিঠাই’ নামটি শুনলেই আমাদের চোখে শৈশবের স্মৃতি ভেসে ওঠে। নিয়মিত জনসমাগম হয় এমন যে কোনো জায়গায় আকর্ষণীয় গোলাপি রঙের মিষ্টি খাবার বিক্রি করতে দেখা যায়, যা শিশুদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। তবে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হয়েছে এ খাবার।
চিনি দিয়ে তৈরি এ খাবারটিতে ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে বলে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তামিল নাড়ুর এমন সিদ্ধান্তের পর নড়েচড়ে বসেছে প্রতিবেশী রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও কেন্দ্রশাসিত রাজ্য দিল্লিও।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গত সপ্তাহে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তামিল নাড়ু প্রদেশে হাওয়াই মিঠাইয়ের বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষা করে ক্যানসারের উপাদান পাওয়া যায়। এরপরই সেখানে হাওয়াই মিঠাই বেচাকেনা নিষিদ্ধ করে রাজ্য সরকার।
তামিল নাড়ুর চেন্নাই শহরের ফুড সেফটি অফিসার পি সতীশ কুমার ভারতীয় সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, হাওয়াই মিঠাইয়ে থাকা রাসায়নিকগুলো ক্যানসার তৈরির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেরও ক্ষতি করতে পারে। ভারতে হাওয়াই মিঠাইগুলো বিভিন্ন বিক্রেতা নিজ উদ্যোগে তৈরি করেন। তাদের কারোরই এ খাবার তৈরির অনুমোদিত কারখানা নেই।
তিনি বলেন, তার দল গত সপ্তাহে শহরের একটি সমুদ্র সৈকতে হাওয়াই মিঠাই বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। বিক্রেতাদের কাছ থেকে সংগৃহীত নমুনা ল্যাবে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায়, হাওয়াই মিঠাইকে গোলাপি রঙে রাঙাতে রাসায়নিক যৌগ রোডামিন-বি ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নিক যৌগটি সাধারণত কাপড়, প্রসাধনী ও কালির রঙ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
তামিল নাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমএ সুব্রামানিয়ান বলেছেন, রোডামিন-বি কোনো খাবারের প্যাকেজিং, রপ্তানি, বিক্রি করা, বা রোডামিন-বি যুক্ত খাবার বিয়ে অথবা অন্যান্য অনুষ্ঠানে সরবরাহ করা ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাক্ট, ২০০৬ এর আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
এদিকে, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস চলতি সপ্তাহে জানিয়েছে, ভারতের রাজধানী দিল্লির ফুড সেফটি কর্মকর্তারাও হাওয়াই মিঠাই নিষিদ্ধ করার জন্য জোর দিয়েছেন।
রোডামিন-বি মানবদেহে প্রবেশ করলে ক্যানসারের ঝুকি বাড়তে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে এরই মধ্যে খাবারের রঙ হিসেবে এই উপাদানের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপের দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য।