২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক স্তরের ৬২টি স্কুলে নতুন কারিকুলামে পাইলটিং ক্লাস শুরু হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি আশা প্রকাশ করেন নতুন করে আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়াতে হবে না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে নতুন কারিকুলামে পাইলটিং (পরীক্ষামূলক) ক্লাস শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের এক কর্মশালায় তিনি এ কথা জানান। ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে করোনা সংক্রমণ কমে আসছে। আশা করি ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া সম্ভব হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে আমরা মাধ্যমিকের নতুন কারিকুলামে পাইলটিং ক্লাস শুরু করবো। এ বিষয়ে শিক্ষকদের ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, শিশু-কিশোরদের পড়ালেখা আনন্দময় করে তুলতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে পড়ার চাপ, মানসিক চাপ কমে যাবে, যা ব্যক্তি জীবনে কাজে আসবে।
নতুন কারিকুলামে প্রথম দিকে নানা ভুলভ্রান্তি উঠে আসতে পারে উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, শুরুতে আমাদের নানা ধরনের ভুল উঠে আসতে পারে। পাইলটিং শেষ করার আগে সেসব সংশোধন করা সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে সবার ক্ষেত্রে সুযোগ নিশ্চিত করা সরকারের মূল লক্ষ্য বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
কর্মশালায় শিক্ষাবিদ ও লেখক অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন আনন্দময় করতে নতুন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা শুধু মেধা নয়, নিজেরা নিজেদের মতো করে তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারবে। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন হলে তথ্য মাথায় নিয়ে শিক্ষার্থীরা আর ঘুরবে না, তারা সেটি বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হবে।
শিক্ষাবিদ সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে খণ্ডে খণ্ডে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিচ্ছি। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে উঠলে তারা গভীর সমুদ্রের মধ্যে পড়ে। জোর করে তাদের ওপর বিভিন্ন বিষয় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মুখস্তবিদ্যা থেকে বেরিয়ে আসতে নতুন কারিকুলাম বড় ভূমিকা রাখবে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, শুধু কারিকুলাম পরিবর্তন করলে হবে না। সেটি বাস্তবায়নে সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। নতুন কারিকুলামে গ্রামের শিশুদের সঙ্গে শহরের শিশুদের বৈষম্য না থাকে সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের যে স্কুলে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন হবে- এ ধরনের ১১৫টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এনসিটিবির আওতায় সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এজন্য কিছু শিক্ষককে তৈরি করা হবে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে। তারা অন্যান্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের মধ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শেষ না হলে এনসিটিবি কার্যক্রম বাস্তবায়ন হতে দেবে না। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েই এটি বাস্তবায়ন হবে।