জ্বালানি তেল বিক্রির উপর কমিশন বাড়ানোরসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস এন্ড পেট্রল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশন। এছাড়া ইতিপূর্বে সরকারের দেয়া সব প্রতিশ্রুতি সাত দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে আগামী ৩১ আগস্ট ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দেশের সব পেট্রল পাম্প ও ট্যাংক লরির মালিকরা কর্মবিরতি পালন করে উত্তোলন বন্ধ করে দেবে।
বুধবার (২৪ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নাজমুল হক বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি দাবি মানা না হয় তাহলে পরবর্তীতে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেয়া হবে। বিপিসি তাদের ব্যয় কমাতে জনগণের ঘারে ৪৬ টাকা চাপিয়ে দিয়েছে, অন্যদিকে আমাদের দুই টাকা কমিশন বাড়াতে চায় না। এভাবে লোকসান দিয়ে পেট্রল পাম্প মালিকরা এই ব্যবসায়ী টিকে থাকতে পারবে না। বিগত বছরগুলোতে সব পেশাজীবী মানুষের বেতন ভাতা আয় বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু পেট্রল পাম্প মালিকদের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়লেও কমিশন বা মুনাফার হার কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। অথচ সারা দেশে আমরাই সরকার নির্ধারিত মূল্যে জনগণের কাছে জ্বালানি পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি।
নাজমুল হক আরও বলেন, আমাদের কমিশন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ২০০৯ সাল থেকেই আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। ২০১৩ সালে আমাদের তেল বিক্রির কমিশন অকটেন পেট্রলে ৪.৭৫ শতাংশ এবং ডিজেলের ৩.২২ শতাংশ নির্ধারিত ছিল। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে আমরা উক্ত কমিশন ৭% করার জন্য আবেদন নিবেদন করেও ব্যর্থ হই। জ্বালানি মন্ত্রণালয় আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও তা ছয় বছরের বাস্তবায়ন করা হয়নি। উপরন্তু গত ৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে আমাদের কমিশনের হার কমিয়ে দিয়ে অকটেন পেট্রলের ক্ষেত্রে ৩.৭৮ শতাংশ এবং ডিজেলের ক্ষেত্রে ২.৫৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের পরিমাণে কারচুপি রোধে অভিযানের নামে পেট্রল পাম্প মালিকদের জরিমানা ও হয়রানিসহ সামাজিকভাবে হেয় করা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তারা বিভিন্ন অজুহাতে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে জরিমানা করে আসামি বানিয়ে মিডিয়ায় প্রচার করছে। ভোক্তা অধিদপ্তর পেট্রল পাম্পের নবায়ন পত্র না দেখালে পাম্প মালিককে জরিমানা করছে। শুধু তাই নয় এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে কাগজপত্র পরীক্ষার নামে পাম্প মালিকদের চরমভাবে হয়রানি করছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের আচরণে পেট্রল পাম্প মালিকরা চরম ক্ষুব্ধ এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।
পেট্রল পাম্প মালিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে:
জ্বালানি মন্ত্রণালয়, বিপিসি এবং অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তেল বিক্রির কমিশন তেলের মূল্যের ওপর শতকরা হার বা পার্সেন্ট ভিত্তিতে করতে হবে।
তেলের পরিমাপে কারচুপি রোধে নিয়মিত মনিটরিং অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিপিসি বা বিপণন কোম্পানির প্রতিনিধি ছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তর বিএসটিআইয়ের অভিযান এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাবে না। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কারচুপি রোদে নিয়মিত মনিটরিং এর জন্য অনতিবিলম্বে তেল কোম্পানি বিএসটিআই এবং অ্যাসোসিয়েশন বিডি সমন্বয়ে গঠিত মনিটরিং সেল এর কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কোনো দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান পাম্পের কাগজপত্র চেক করার নামে মালিকের হয়রানি করা যাবে না পাম পরিদর্শনকালীন সঠিক এবং উভয় তথ্য লিপিবদ্ধ এবং প্রচার করতে হবে এবং এর কপি মালিককে সরবরাহ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
সওজ-এর নির্ধারণ ইজারামা শুরু যৌক্তিক হাটে নির্ধারণ করতে হবে। বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং বিএসটিআই ও অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত যৌথ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্ডারগ্রাউন্ডের সার্টিফিকেট কথা বাতিল করতে হবে।
২০১১ সালে সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাস্তায় কাগজপত্রের নামে পরিচালককে পুলিশের হয়রানি করা যাবে না।