নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সার্ভার পুনরায় চালু হয়েছে। তবে এখনও পুরোটা সচল হয়নি। বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ূন কবীর এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রায় ৩২ ঘণ্টা পর নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র সার্ভারের পরিষেবা চালু হয়েছে। হ্যাকিং রোধে সার্ভারটির কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
এর আগে, সোমবার (১৪ আগস্ট) থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডার ও জাতীয় পরিচয়পত্র সেবাসংক্রান্ত ওয়েবসাইটও বন্ধ রাখা হয়েছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, সোমবার অফিস সময় শেষ হওয়ার পরই তথ্যভান্ডারের সার্ভার বন্ধ রাখার জন্য মহাপরিচালক নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই নির্দেশনার আলোকে সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা পাওয়ার ওয়েবসাইটও ডাউন করে দেওয়া হয়েছে। যেন সেখানে কেউ প্রবেশ করতে না পারেন।
এতে ১৭১টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই নয়, বিপাকে পড়েছিলেন ইসির মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারাও।
ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডার আক্রান্তের শঙ্কা করছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই শঙ্কায় নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের দিয়ে কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট) গঠন করেছে। পাশাপাশি সক্রিয় করা হয়েছে সিকিউরিটি অপারেশন্স সেন্টার (সক) ও নেটওয়ার্ক অপারেশন্স সেন্টার (নক)। এ ছাড়াও সাইবার নিরাপত্তায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, এনআইডি সার্ভার বন্ধ থাকায় অনেক ব্যাংক ও সেবা প্রতিষ্ঠানেও বন্ধ রয়েছে সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদান। বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেল ৫টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সার্ভার।
এদিকে ভারতীয় হ্যাকারদের সাইবার আক্রমণে দেশে ২৫টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, আইসিবি এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেস, ডিজিএইচএস। সে হামলা থেকে বাঁচতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সার্ভার। সাইবার হামলায় প্রায় ১০ হাজার বিনিয়োগকারী এবং বিনিয়োগ আবেদনকারীদের তথ্য থাকায় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, আইসিবি’র ওয়েবসাইট হ্যাকিং উল্লেখযোগ্যভাবে বড়। এতে সরকারি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারীদের নাম, ঠিকানা ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আর ডিজিএইচএসের ফাঁস হওয়া তথ্যে সরকারি হাসপাতাল থেকে রাজস্ব সংগ্রহের পরিসংখ্যান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।