৬৫ বছরের বেশি বয়সীরাও এখন থেকে হজে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
তিনি বলেন, সবাই যাতে নিরাপদে হজে যেতে পারেন সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬৫ বছরের বেশি বয়সের ব্যক্তিদেরও হজ পালন করার সুযোগ করে দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নেত্রকোনায় ধর্মীয় সম্প্রতি ও সচেতনতামূলক আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে বিগত দুটি বছর পবিত্র হজ পালন করা সম্ভব হয়নি। এ বছর আমরা হজ পালন করতে পেরেছি। এখন থেকে সব কিছু সহজ হয়ে যাচ্ছে। আগে হজের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অনেক সময় লাগতো, এখন কয়েক দিনের মধ্যে সম্ভব হয়।
বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে ফরিদুল হক খান বলেন, গত ৩৬ বছরে যা সম্ভব হয়নি তা প্রায় ১৪ বছরে শেখ হাসিনা সরকার তা সম্ভব করেছে। সব কিছুতেই উন্নয়ন হচ্ছে। শুধু ইসলাম ধর্মের জন্যই নয়, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের আমানত চার কোটি টাকা থেকে সাত কোটি টাকায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বৌদ্ধ বিহার প্যাগোডা নির্মাণ ও সংস্কারে দুই কোটি ৫৭ লাখ টাকা, অসচ্ছল ভিক্ষু ব্যক্তিদের চিকিৎসায় প্রায় ৩৮ লাখ টাকার অনুদান, দুই হাজার ৪ বৌদ্ধ বিহারে সাত কোটি ৮৫ লাখ, বৌদ্ধ বিহার ও শ্মশান উন্নয়নে চার কোটি ২৮ লাখ টাকা প্রদানসহ দেশের অর্থায়নে নেপালের লুম্বিনীতে বৌদ্ধ বিহার নির্মাণে ছয় কোটি ৬৭ লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের স্থায়ী মূলধন ২১ কোটি টাকা থেকে ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সংস্কারে ২৬৩ কোটি টাকা, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির উন্নয়নে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা, পুরোহিতদের প্রশিক্ষণে ৫০ কোটি টাকা, মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কাযক্রম চালু রয়েছে।
‘২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রবর্তন করা হয়েছে। দেশের এই উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে শেখ হাসিনা সরকারকে ভোট দিয়ে আবারও ক্ষমতায় রাখতে হবে’, বলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মনির হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছাড়াও বক্তব্য দেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অসিত সরকার, পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল ইসলাম, কলমাকান্দা উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার, প্যানেল মেয়র মহসিন আলম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্পিতা খানম, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জ্ঞানেশ সরকার, হিন্দু বৌদ্ধা খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সীতাংশু বিকাশ আচায, জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমান খান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, এই দেশ অসাম্প্রদায়িক। এখানে হাজার বছর ধরে বহু ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একসঙ্গে বসবাস করছে। প্রত্যেক ধর্মেই শান্তির কথা বলা আছে। সব ধর্মকেই সম্মান দিতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধে সব ধর্মের মানুষ রক্ত দিয়েছেন। হাজার বছরের এই সম্প্রতি বজায় রাখতে হবে।