সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

গত এক বছরে গাজীপুরে ১৭৮টি গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ

প্রকাশঃ

গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যা, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধিসহ নানা কারণে গাজীপুর জেলায় গত এক বছরে ছোট ও মাঝারি ১৭৮টি গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়েছে।

কারখানা বন্ধ হওয়ার জন্য পোশাকশিল্পের মালিকেরা বিভিন্ন বিষয়কে দায়ী করেছেন। তাঁরা বলছেন, গত বছর শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পায়। যে কারণে কারখানাগুলোর উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। কমপ্লায়েন্স বা কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নের কারণেও খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি করেননি ক্রেতারা। আবার অনেক সময় পর্যাপ্ত ক্রয়াদেশও থাকে না। এ ছাড়া গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যা তো রয়েছেই।

পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, কারখানার মালিক ও শ্রমিক এবং গাজীপুরের শিল্প পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে গাজীপুর জেলায় মোট ১৭৮টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে। বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোর মধ্যে ৭৬টি তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্য এবং পাঁচটি নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সদস্য। বাকিগুলো সাবকন্ট্রাকটিং বা ঠিকা ভিত্তিতে কাজ করে এমন ধরনের কারখানা। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলোয় কাজ করতেন প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। তাঁদের মধ্যে অল্পসংখ্যক অন্য কারখানায় কাজ পেলেও অধিকাংশ এখনো বেকার রয়ে গেছেন।

জানতে চাইলে গাজীপুরের ওয়ার্কফিল্ড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হাসান প্রথম বলেন, গত কয়েক বছরে অনেক কারণে পোশাকের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই তুলনায় ক্রেতারা মূল্য বৃদ্ধি না করে উল্টো কমিয়েছে। তা ছাড়া কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নের জন্য মালিকদের প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। অনেকের আবার সেই সামর্থ্য না থাকায় কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।

গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকার ম্যানট্রাস্ট কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। তাতে দেড় হাজার শ্রমিক বেকার হন। মারুফ হোসেন নামে ওই কারখানার একজন শ্রমিক বলেন, ‘ছেলে–মেয়ে নিয়ে আমার সুখের সংসার ছিল। কারখানা বন্ধের পর অন্য কোথাও কাজ পেলাম না। বাধ্য হয়ে অটোরিকশা চালাচ্ছি। সারা দিন কষ্ট করেও আগের মতো আয় হচ্ছে না।’ তিনি জানান, ম্যানট্রাস্ট কারখানায় তাঁর অনেক সহকর্মী চাকরি না পেয়ে গ্রামে ফিরে গেছেন।

বিসিক শিল্পনগরের নাইটিঙ্গেল ফ্যাশন লিমিটেডের তিনটি কারখানা গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে বন্ধ। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় মাসের পর মাস লোকসান গুনতে হচ্ছিল। তাই কারখানাগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ