ইন্দোনেশিয়ার সেমেরু আগ্নেয়গিরির ফের সক্রিয়া হয়ে উত্তপ্ত ছাই উদগীরণ করেছে। জাভা দ্বীপের সর্বোচ্চ এই আগ্নেয় পর্বতটি থেকে গত শনিবার উত্তপ্ত ঘন ছাই ও ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডুলি উৎক্ষিপ্ত হয়ে আশপাশের গ্রামগুলো ঢেকে দেয়। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২ জনে দাঁড়িয়েছে, আরও ২৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ফুটেজে দেখা গেছে, বিস্তৃত এলাকা ঘন ছাইয়ে ঢাকা পড়ে আছে আর তার মধ্যেই ভবনগুলো মাথা বের করে আছে। নিচের গ্রামগুলোতে সামরিক কর্মকর্তারা, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা হাত দিয়ে ছাই, কাদা সরিয়ে আটকা পরা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরি এবং ভূতাত্ত্বিক ঝুঁকি প্রশমন কেন্দ্র তাদের টুইটার একাউন্টে সোমবারের উদগীরণের কথা নিশ্চিত করেছে। আগ্নেয়গিরিটির সক্রিয়তা অব্যাহত আছে বলে সতর্ক করেছে তারা।
সেমেরু আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণাগারের প্রধান লিসওয়ান্তো বলেন, ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে সেমেরু একটি। ৪ ডিসেম্বরের উদগীরণের আগেও এটি সক্রিয় ছিল, পরেও এর সক্রিয়তা বজায় আছে এবং থাকবে।
আরও পড়ুন : ইন্দোনেশিয়ায় আবারও অগ্ন্যুৎপাত, নিহত ১৩
উদ্বিগ্ন কিছু বাসিন্দা তাদের জিনিসপত্র ও গবাদিপশু ঠিক আছে কিনা দেখতে বাড়িতে ফিরেছেন, কিন্তু লিসওয়ান্তো লোকজনকে পর্বতটি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, মাউন্ট সেমেরুর সম্ভাব্য হুমকি এখনো বজায় আছে, তাই লোকজনের আরও বেশি সতর্ক থাকা দরকার।
উদগীরণে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, এদের অধিকাংশই দগ্ধ হয়েছেন। নেমে আসা লাভার প্রবাহে শনিবার লুমাজাং জেলার দুটি এলাকার সঙ্গে মালাং শহরকে সংযোগকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে।
বাস্তুচ্যুত ১৭০০ জনেরও বেশি মানুষের জন্য লঙ্গরখানা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গত এলাকার উদ্দেশ্যে চাল, কম্বল, কাপড়চোপড় ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ত্রাণ প্যাকেজ পাঠানো হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে সেমেরু একটি। জাভা দ্বীপে ৩৬০০ মিটার উঁচু এ আগ্নেয়গিরি থেকে গত জানুয়ারিতেও উদগীরণ হয়েছিল, তবে তখন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।