আমিনবাজার থেকে নবীনগর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তাকে আট লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। এর মধ্যে এখন আমিনবাজার থেকে সাভার পর্যন্ত আট লেনের কাজ চলছে। আর সাভার থেকে নবীনগর পর্যন্ত চলছে রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ।
ঈদ এখনও আসেনি; তবু ঢাকা-আরিচা ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সাভারের অংশে প্রতিটি রাস্তা ও শাখা-সড়কে যানবাহনের চাপ ও তীব্র যানজট দেখা যাচ্ছে। এখনি কার্যকর উদ্যোগ না নিলে এখানে ঘরমুখো মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যানবাহন চালকরা।
সোমবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সাভার উপজেলার জিরানী বাসস্ট্যান্ড, বাইপাইল, জিরাব, আশুলিয়া বাজার এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নবীনগর, সাভার বাসস্ট্যান্ড, হেমায়েতপুর, গেন্ডা সড়ক সরজমিনে এই চিত্র দেখা গেছে। এসব রাস্তা ও আশপাশের সড়কেও দিনভর যানজট সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানা ছুটি হলে যানজটের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, যানবাহনের চালক, যাত্রী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে সড়ক সংস্কার ও যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামার কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা, সার্ভিস লেন দখল করে হকার্সদের ব্যবসা করাও যানজটের কারণ।
ধামরাই-গুলিস্থান বাসের চালক রুস্তম আলী বলেন, “সড়ক বড় করা হলেও যানজট কমছে না। যত্রতত্র সড়কে গাড়ি পার্কিং, সড়কের বিভিন্ন পয়েন্ট বন্ধ করে সংস্কারকাজের কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজটের কারণে অনেক সময় সড়কে গাড়ি বন্ধ করে বসে থাকতে হয়।“
বাসযাত্রী আবুল হোসেন বলেন, “এই রমজান মাসে প্রচণ্ড গরমে গাড়িতে বসে থেকে ভিজে গেছি। আমিনবাজার থেকে সাভার আসতে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগল।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “যতদিন বেঁচে আছি, মনে হয় ততদিন যানজটের এই দুর্ভোগ আমাদের পোহাতেই হবে।”
ঢাকা জেলা (উত্তর) ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আব্দুস সালাম বলেন, মহাসড়কে উন্নয়নমূলক কাজ, যেখানে- সেখানে গাড়ি পার্কিং করে যাত্রী উঠা-নামা করায় এই যানজট সৃষ্টির মূল কারণ। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকছে। মহাসড়কে একাধিক ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না কোনোভাবেই। অসহনীয় এই যানজটের কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সময়মতো কর্মস্থলে যেতে পারছে না।
ঢাকা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শামীম আল মামুন বলেন, “উন্নয়ন কাজের জন্য সাময়িক এ অসুবিধা। যানজটের কথা মাথায় রেখেই সাভারে দ্রুত চলছে চার লেন করে আট লেনের উন্নয়ন কাজ।”
সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, “সড়কের কাজ শুরু করেছে দুই বছরের বেশি হবে; কিন্তু এখনও শেষ হয়নি। সড়কে নির্মাণসামগ্রী রেখে সংস্কারকাজ করছে। এ ছাড়া সড়কের দুই পাশে হকারদের দখলের কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় যানজট সৃষ্টি হয়।”
ট্রাকচালক জহিরুল ইসলাম বলেন, “ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানেই রাস্তার কাজ চলছে। কিন্তু সাভার বাসস্ট্যান্ডে যেমন মানুষের চাপ বেশি তেমনি রাস্তার কাজে বিশৃঙ্খলাও বেশি। বেশ কয়েকটি স্থানে খুঁড়ে পিচ তুলে আবার রাস্তাতেই রাখা হয়েছে। এতে গাড়ি এক লেনে ও আস্তে চলার কারণে যানজট লেগে যায়।“
সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক আতিকুর রহমান বলেন, “অন্যান্যবারের তুলনায় এবার যানজট কম। নিবিঘ্নে মানুষ বাড়ি ফিরতে পারবে। দুই-একটি পয়েন্টে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হলেও ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক তা নিরসনে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।”