আগামী বৃহস্পতিবার থেকে লন্ডনে পর্দা উঠবে ২০১৯ বিশ্বকাপের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে এবারের বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু। প্রায় দেড় মাস ধরে চলা ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এবারে বিশ্বকাপে। এই ম্যাচগুলো হবে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ১১টি স্টেডিয়ামে।
যেসব ভেন্যুতে বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৯ অনুষ্ঠিত হবে
এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ড (বার্মিংহাম): ১৮৮৬ সালে তৈরি ওয়ারিকশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের এই হোম গ্রাউন্ড লর্ডস, ওভাল এবং ওল্ড ট্রাফোর্ডের পর ব্রিটেনের চতুর্থ বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম। নিয়মিত টেস্ট ম্যাচ ভেনু এটি। ২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল হয়েছিল এজবাস্টনে। ঐ প্রথম লর্ডসের বাইরে কোথাও আন্তর্জাতিক কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ হয়েছিল।
এবারের বিশ্বকাপে এজবাস্টনে একটি সেমিফাইনাল সহ পাঁচটি ম্যাচ হবে। ২৫,০০০ আসন বিশিষ্ট এজবাস্টনে এ ভেন্যুতে জুলাইয়ের ২ তারিখে বাংলাদেশ ও ভারতের ম্যাচটি হবে।
ব্রিস্টল ক্রিকেট গ্রাউন্ড (ব্রিস্টল): ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ক্রিকেট স্টেডিয়াম ১৩০ বছর ধরে গ্লস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের হোম-গ্রাউন্ড। এতো পুরনো মাঠ হলেও, এখানে প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচ হয় ১৯৮৩ সালে (নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে)। তারপর থেকে গড়ে বছরে একটি ওডিআই ম্যাচ হয় এখানে। টেস্ট ম্যাচ এখনও হয়নি। আয়তনের দিক থেকে অনেক বড় মাঠ হলেও আসন সংখ্যা মাত্র ১১০০০। এই মাঠে তিনটি ম্যাচ হবে। ১১ই জুন বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচ রয়েছে এই মাঠে।
সোফিয়া গার্ডেনস (কার্ডিফ, ওয়েলস): ১৯৬৭ সাল থেকে মাঠটি গ্লামোরগান কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের হোম গ্রাউন্ড। তবে এখানে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয় ১৯৯৯ সালের ২০শে মে (অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড)। ২০০১ সাল থেকে নিয়মিত ওডিআই ম্যাচ হচ্ছে। এবারের বিশ্বকাপে চারটি ম্যাচ রয়েছে। ৮ই জুন বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের ম্যাচটি হবে কার্ডিফের এই মাঠে। আসন সংখ্যা – ১৫,২০০।
রিভারসাইড (চেস্টার লে স্ট্রিট, ডারহাম): অপেক্ষাকৃত নতুন ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ১৯৯৫ তে শুরু হলেও ২০০৩ সালে টেস্ট ভেনুর মর্যাদা পেয়েছে ডারহাম কাউন্টির এই হোম গ্রাউন্ড। ১৪,০০০ আসন বিশিষ্ট এই মাঠে তিনটি ম্যাচ হবে।
হেডিংলি (লিডস): ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্লাবের এই মাঠে ১৮৯৯ সাল থেকে টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই মাঠে প্রথম ওডিআই ম্যাচ হয় ১৯৭৩ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে। আসন সংখ্যা – ১৮,৩৫০। ২০১৯ বিশ্বকাপে ৪টি ম্যাচ হবে হেডিংলিতে।
লর্ডস (লন্ডন): হোম অব ক্রিকেট` নামে খ্যাত লন্ডনের এই ক্রিকেট মাঠের পত্তন হয়েছিল ১৮১৪ সালে। মিডলসেক্স কাউন্টি ক্লাবের এই হোম গ্রাউন্ডের মালিকানা এমসিসি`র। ২০০৫ সাল পর্যন্ত আইসিসির সদর দপ্তর ছিল এখানে।
ফাইনাল ম্যাচ সহ পাঁচটি ম্যাচ হবে লর্ডসে। ৫ জুলাই এই মাঠে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই মাঠে আসন সংখ্যা – ২৮,৫০০।
ওভাল (লন্ডন): ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে প্রথম টেস্ট ম্যাচটি হয়েছিল ওভালের মাঠে, ১৮৮০ সালে। ১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্টেডিয়ামে একসময় ফুটবলও খেলা হতো। তবে সারে কাউন্টি ক্লাবের এই হোম গ্রাউন্ডে এখন শুধু ক্রিকেটে খেলা হয়।
এই বিশ্বকাপে মোট পাঁচটি ম্যাচ হবে ওভালের মাঠে। বাংলাদেশের পর পর দুটো ম্যাচ রয়েছে ওভালে। জুনের ২ তারিখে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে। ৫ই জুন নিউজিল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের পরের ম্যাচটিও হবে ওভালের মাঠে। আসন সংখ্যা – ২৫,০০০।
ওল্ড ট্রাফোর্ড (ম্যানচেস্টার): ওল্ড ট্রাফোর্ড ইংল্যান্ডের আরেকটি বহু পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী ক্রিকেট মাঠ যার বয়স দেড়শ` ছাড়িয়ে গেছে। প্রথমে এটি ছিল ম্যানচেস্টার ক্রিকেট ক্লাবের গ্রাউন্ড, তবে ১৮৬৪ সাল থেকে এটি ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্লাবের হোম গ্রাউন্ড। ১৮৮৪ সালে (জুলাই ১০-১২)অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি হয়েছিল ওল্ড ট্রাফোর্ডে। এ মাঠে প্রথম ওডিআই হয় ১৯৭২ সালের ২৪শে আগস্ট, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে।
একটি সেমিফাইনাল সহ ছয়টি ম্যাচ হবে এখানে। তার মধ্যে রয়েছে ১৬ই জুন ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচ। আসন সংখ্যা – ২৪,৬০০।
ট্রেন্ট ব্রিজ (নটিংহ্যাম): ১৮৯৯ সাল থেকে ট্রেন্ট ব্রিজে টেস্ট ম্যাচ খেলা হচ্ছে। প্রথম ওডিআই হয়েছিল ১৯৭৪ সালে ৩১শে আগস্ট ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের মধ্যে। প্রচুর রান হয় এই মাঠে। ওডিআই ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ ৪৮১ রানের রেকর্ডটি নটিংহ্যাম কাউন্টি ক্লাবের এই মাঠেই হয়েছে।
এই বিশ্বকাপে পাঁচটি ম্যাচ হবে ট্রেন্টব্রিজে। ২০শে জুন বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার লড়াই হবে এখানে। আসন সংখ্যা- ১৭,০০০
রোজবোল (সাদামটন): হ্যাম্পশায়ার ক্রিকেট কাউন্টির এই হোম গ্রাউন্ড অন্য মাঠগুলোর তুলনায় নতুন ক্রিকেট মাঠ। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এই মাঠে অবশ্য তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটই (টেস্ট, ওডিআই, টি-টুয়েন্টি) হচ্ছে। তবে বিশ্বকাপ হচ্ছে এই প্রথম।
এই বিশ্বকাপে রোজবোলের মাঠে পাঁচটি ম্যাচ হবে। এর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের ম্যাচ, ২৪ জুন। আসন সংখ্যা – ১৭,০০০
টনটন (সমারসেট): সমারসেট কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের হোম গ্রাউন্ডটি ১৮৮২ সালে চালু হলেও এখনও এটি টেস্ট ভেনুর মর্যাদা পাইনি। তবে ১৯৮৩ সাল থেকে এখানে ওডিআই ম্যাচ হচ্ছে।
বাংলাদেশে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে ১৭ জুনের ম্যাচটিসহ এবারের বিশ্বকাপের তিনটি ম্যাচ হবে টনটনে। আসন সংখ্যা – ৮,০০০