মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল আজহাকে সামনে রেখে প্রতিবছরই নতুন নোটের চাহিদা বাড়ে। রোজার ঈদের মতোই কোরবানি ঈদে নতুন নোট ছাপানোর প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এবারের ঈদ উপলক্ষে ২৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হবে। তবে করোনার কারণে রোজার ঈদের মতো কোরবানির ঈদেও সর্বসাধারণের মাঝে নতুন টাকা বিনিময়ের সুযোগ রাখা হচ্ছে না।
তাই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে নতুন টাকা বিনিময় করা হবে। এ প্রক্রিয়া চলতি সপ্তাহে শুরু হতে পারে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ঈদের আগের মাসের বেতন ও বোনাসের টাকা নতুন নোটে পাওয়ার আশা করেন চাকরিজীবীরা। এছাড়া ঈদের আগে সালামি ও বকশিশের জন্য নতুন টাকা সংগ্রহ করে সাধারণ মানুষ। এটা মাথায় রেখেই প্রতিবছর দুই ঈদে নতুন টাকা বাজারে ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত রোজার ঈদে ৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আর গত কোরবানির ঈদে ২০ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হয়েছিল।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, কোরবানির কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে নগদ টাকার চাহিদা বেশি হবে। এটা বিবেচনায় নিয়ে এবার ২৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাড়ার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই একেবারে নতুন নোট। স্বাভাবিক সময়ে সাধারণের মাঝে নতুন টাকা বিনিময়ের সুযোগ রাখা হয়। কিন্তু করোনার কারণে এই সুযোগ রাখা হচ্ছে না। ফলে গতবারের চেয়ে এবার চাহিদা কিছু কম হবে বলেই মনে হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে বিভিন্ন ব্যাংকে নতুন নোট দেয়া হবে। সে টাকাই ধীরে ধীরে গ্রাহক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়বে।
ঈদ সালামিতে নতুন টাকা পেতে পছন্দ করে ছোট-বড় সবাই। পাশাপাশি বকশিশ, দান-খয়রাতেও অনেকে নতুন টাকা সংগ্রহ করে। তবে করোনা মহামারীর কারণে রোজার ঈদের মতো কোরবানির ঈদেও সর্বসাধারণের জন্য নতুন টাকা বিনিময়ের সুযোগ রাখা হচ্ছে না। ব্যাংকের যারা গ্রাহক, তারা লেনদেনের সময় নতুন টাকা নেয়ার সুযোগ পাবেন। এছাড়া এটিএম বুথেও গ্রাহকরা নতুন টাকা পাবেন।
মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার চাপ বেড়েছে অনেক আগে থেকেই। গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে সংকটে পড়া ব্যাংকগুলো প্রতিদিনই নগদ টাকার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে। রেপো ও বিশেষ তারল্য সহায়তার আওতায় প্রতিদিনই ব্যাংকগুলোকে হাজার হাজার কোটি টাকা সরবরাহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনা সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ায় ভবিষ্যতে নগদ টাকার চাহিদা আরও বাড়বে।
ব্যাংকাররা জানান, সারা বছর ৪০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ বিভিন্ন মূল্যমানের নোট প্রয়োজন হয়। এর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ প্রয়োজন হয় দুই ঈদে। তবে এবার করোনার সংকটের কারণে নগদ টাকার চাহিদা বেশি হচ্ছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এক লাখ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন শুরু হওয়ায় বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। এই মুদ্র্রা সরবরাহের একটি অংশ নগদ টাকা হিসেবে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।