প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকারখানার শ্রমিকদের আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বেতন পরিশোধ করতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন অনেক কারখানার মালিক।
তবে অনেকেই বলছেন, এই সময়ে শ্রমিকদের হাতে বেতন পৌঁছে দেওয়া চ্যালেঞ্জিং হবে। ব্যাংক খোলার এক দিনের মাথায় বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। এ অবস্থায় ১৬ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকের বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে কারখানা বন্ধ থাকলেও কোনো শ্রমিককে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা যাবে না। শ্রমিকদের গত মার্চ মাসের বেতন আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করতে শিল্প কারখানা মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
কারখানার মালিকরা বলেন, ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের ছুটির পর ১৫ এপ্রিল ব্যাংক খুলবে। এর পরে এক দিনের মধ্যে বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ অধিকাংশ শ্রমিক গ্রামের বাড়িতে। অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, স্যালারি শিট প্রস্তুত করা সময়সাপেক্ষ। বিকাশের মাধ্যমে একসঙ্গে এত শ্রমিকের বেতন দেওয়ায় নতুন জটিলতা তৈরি হবে। তবে ২০ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বেতন দেওয়া সম্ভব।
ডিজাইন অ্যান্ড সোর্স গার্মেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘সবকিছুই বন্ধ। শ্রমিকদের স্যালারি শিট তৈরিও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাছাড়া ব্যাংক খুলবে ১৫ তারিখে। এই সময়ে টাকা তুলে একদিনের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। সাধারণত আমরা অন্য সময় ২৫ তারিখ থেকে বেতন দেওয়ার প্রস্তুতি নিই এবং ৫ তারিখে বেতন দেই। ফলে আমাদের ১০ দিন সময় লাগে। সেই হিসেবে ১৫ তারিখে টাকা পেলে হয়তো ২৫ এপ্রিল বেতন দিতে পারব।’
অনেকে মনে করছেন, শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাজ করা যাচ্ছে না। ব্যাংক থেকে টাকা না পেলে দেওয়া সম্ভব না। এটা নিয়ে জটিলতা হয় কিনা দেখার বিষয়। শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। অধিকাংশই নগদ বেতন নেন।
এজে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমার সব মিলিয়ে ২ হাজার ৮০০ শ্রমিক আছে। আমি একটা পদ্ধতি বের করে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করবো। তবে ১৬ তারিখের মধ্যে দেয়া চ্যালেঞ্জিং। ব্যাংক থেকে টাকা পেতে হবে। শ্রমিকদের ১০ শতাংশেরও অ্যাকাউন্ট নেই।’
তবে অনেকে ১৬ এপ্রিলের মধ্যে বেতন দিতে পারবেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।