দেশে বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের সময় বিদেশগামী ফ্লাইট চালু রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।
সোমবার বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এক সপ্তাহের জন্য সব যাত্রীবাহী আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের আনাগোনা নিষিদ্ধ করেছিল, যা আজ (বুধবার) থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
কিন্তু জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রা আর ট্রাভেল এজেন্টদের সংগঠন আটাব বলছে কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে অন্তত ২৮ হাজার বিদেশগামী শ্রমিক দুর্ভোগে পড়বে এবং তাদের অনেকের জন্য চাকুরি হারানোর পরিস্থিতি তৈরি হবে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ রাখলে সেটি করোনা সংক্রমণের গতি রোধে ভূমিকা রাখবে কি-না।
কারণ ইতালি ও যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশে যখন সংক্রমণ ব্যাপক মাত্রায় বাড়ছিল, তখনো সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করেনি বাংলাদেশ। শুধু নির্দিষ্ট কিছু রুটে গত বছর বিমান চলাচল বন্ধ করা হয়েছিল।
সে সময় অনেকেই যারা এসেছেন, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনেও ঠিক মতো রাখা হয়নি বলে জানা যায়। বরং হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় কেউ কেউ বিয়ে করেছেন এমন খবরও এসেছিল গণমাধ্যমে।
আবার বিদেশ থেকে আসা অনেকেরই হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা থাকলেও সেটি হয়নি।
আটাবের সভাপতি মনসুর আহমেদ বলছেন সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ঢালাওভাবে বন্ধ থাকলে অভিবাসী শ্রমিকদের চাকরি ঝুঁকিতে পড়বে। এই এক সপ্তাহে যাদের যাবার কথা, সময়মত যেতে না পারলে তাদের অনেকেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। আবার অনেকের আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। অনেকে পরে গিয়ে আর চাকরিতে ফিরতে পারবেন না।
ফ্লাইট বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন যাত্রীরা কোভিড-১৯ টেস্ট করে যাবে এবং বিমানবন্দরে পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু সেটি করার বদলে ঢালাওভাবে ফ্লাইট বন্ধ করে শ্রমিকদের ফেরাকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।
‘লকডাউনে গার্মেন্ট কলকারখানা খোলা থাকবে, অবকাঠামো নির্মাণ চলবে, ব্যাংক খোলা থাকবে- তাহলে বিদেশে গিয়ে কাজ করেন এমন শ্রমিকরা কী অপরাধ করলো? এক সপ্তাহ পর তো আবার টিকেট সংকট দেখা দেবে। ফ্লাইট চালু হলেও তো অনেকে যেতে পারবে না,’ বলছিলেন মনসুর আহমেদ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চার হাজার প্রবাসী শ্রমিক ঢাকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে গিয়ে থাকেন।
ওদিকে বায়রা এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও নেপালসহ অনেক দেশই জরুরি খাত হিসেবে শ্রমিকদের বিদেশে পাঠাচ্ছে। তারা মনে করেন এ অবস্থায় বাংলাদেশ এটি বন্ধ করলে শ্রমবাজার প্রতিযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশই।