মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

কমলাপুর থেকে প্রথম ট্রেন ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটে ভাঙ্গায়

প্রকাশঃ

ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যায় প্রথম ট্রেন। ৮২ কিলোমিটারের এ দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে ট্রেনটির সময় লাগে মাত্র ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট।
গুগল নিউজে ফলো করুন আরটিভি অনলাইন

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৭ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা করে। আর দুপুর ১২টা ১৭ মিনিটে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছায়।

ট্রেনটি ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জড়ো হওয়া মানুষ ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে স্বাগত জানান। এর মধ্যে দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকা যুক্ত হলো রেলপথে।

পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটি লোকোমাস্টার হিসেবে এনামুল হক এবং সহকারী লোকোমাস্টার হিসেবে এম এ হোসেন ট্রেন চালাচ্ছেন। আর গার্ড হিসেবে ট্রেন পরিচালনা করছেন আনোয়ার হোসেন। পরীক্ষামূলক ট্রেনের যাত্রী হিসেবে পর্যবেক্ষণ করছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকৌশলী সিবলি সাদিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত পাঁচটি স্টেশনই এখন প্রায় প্রস্তুত। খুঁটিনাটি যে কাজ বাকি আছে তা প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের আগেই শেষ হবে। আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথ উদ্বোধন করবেন।

সূত্র জানায়, প্রতিটি স্টেশনেই থাকছে এটিএম বুথ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকছে বিশেষ র‌্যাম্প। ৮২ কিলোমিটার রেলপথের ২৩ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার অংশ ভায়াডাক্টের ওপর। ভায়াডাক্ট ও পদ্মা সেতুর ওপর পাথরবিহীন রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে।

ঈশ্বরদীর বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আশীষ কুমার মণ্ডল বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে বিশেষ এই ট্রেনের পরিচালনায় অংশ নিতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জন্য পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেল চলাচলে দক্ষিণবঙ্গের ব্যাপক উন্নতি ঘটবে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর কমলাপুর থেকে ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে বিশেষ ট্রেনটি ছেড়ে যায়। এর মধ্য দিয়ে এই প্রকল্পের পথে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে ট্রেন পৌঁছার পর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রেলপথমন্ত্রী। মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের জুন মাসে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০৩০ সাল নাগাদ রেলপথটির ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে প্রতিদিন ১৩ জোড়া, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে ৭ জোড়া ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে ৫ জোড়া ট্রেন চলবে। এ সময়ের মধ্যে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বছরে ৪০ লাখ, ভাঙ্গা-কাশিয়ানী অংশে বছরে ১৭ লাখ ও কাশিয়ানী-যশোর অংশে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব বলে ধরা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে যখন প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়, তখন এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বাকি অর্থ ব্যয় করছে বাংলাদেশ সরকার।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ