ভারতে বেপরোয়া গতিতে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এ অবস্থায় ব্রাজিলকে পেছনে ফেলে দিয়ে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থান দখল করে নিয়েছে দেশটি। আন্তর্জাতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, গত শনিবার রাতেই ব্রাজিলকে ছাপিয়ে যায় ভারত। এখন সামনে শুধুই আমেরিকা। আর ভারতে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, আমেরিকাকে টপকাতে খুব বেশি দেরি নেই।
আন্তর্জাতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, শনিবার মধ্য রাত পর্যন্ত ভারতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৫৯৪ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ৪১ লাখ ১০ হাজার ৮৮৩। যেখানে ব্রাজিলে মোট সংক্রামিত ৪০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮৩ জন। অথচ শুক্রবার পর্যন্তও সংক্রমণের নিরিখে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে ছিল ভারত।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, শনিবার দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪০ লাখ ২৩ হাজার ১৭৯ জন। পরীক্ষার সংখ্যা বাড়তেই সংক্রমণে এই বৃদ্ধি বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৮৯ জন। এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৬৯ হাজার ৫৬১ জনের। মৃত্যুহার কমে হয়েছে ১.৭৩ শতাংশ। বর্তমানে দেশে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৩৯৫ জন। অর্থাৎ মোট সংক্রামিতের ২১.০৪ শতাংশ চিকিৎসাধীন। প্রতিদিনই দেশে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার দেশজুড়ে ১০ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটকের মতো রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছিল। দিল্লিতে গত মাসের তুলনায় শেষ কদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর নিরিখে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র।
অশনি সংকেত ফ্রান্সে : করোনাভাইরাসের তান্ডবে লন্ডভন্ড পুরো বিশ্ব। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এদিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফ্রান্সে করোনাভাইরাসের আরও গুরুতর সংক্রমণ ঘটতে যাচ্ছে। হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে অনেক বেশি মানুষ ভর্তি করা হতে পারে। শনিবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভিয়ার ভেরান এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন। বিএফএম টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভেরান অবশ্য সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা নাকচ করে দিয়েছেন। তার মতে শনাক্তকরণ পরীক্ষার মাধ্যমেও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই সম্ভব। তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণ লকডাউনের বিষয়টি ভাবতে পারি না। লকডাউন ছিল উপচে পড়া রান্নার পাত্রের ঢাকনার মতো। গত বসন্তে মহামারী যে ঢেউ আঘাত হেনেছিল আমরা পুরোপুরি সেই অবস্থায় নেই। আমাদের সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ধীর, তবে আমাদের অবশ্যই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। চলতি সপ্তাহে গড়ে ৫৫ জন রোগী হাসপাতালের আইসিইউতে প্রতিদিন ভর্তি হয়েছেন। এর মানে হচ্ছে, আমরা প্রতিমাসে হাসপাতালে এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার রোগীকে আইসিইউ ইউনিটে পাচ্ছি। এটা প্রশমিত অবস্থা নয় এবং আমাদের অবশ্যই অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে।’