বৃহস্পতিবার, ১৪ই নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

কর্মকর্তারা ইচ্ছামতো আয়কর নির্ধারণ করতে পারবেন না

প্রকাশঃ

কর্মকর্তারা নিজের ইচ্ছামাফিক আয়কর নির্ধারণ করতে পারবেন না। আয়কর কর্মকর্তার ‘ডিসক্রিশনারি পাওয়ার’ কমিয়ে বাংলায় করা হচ্ছে নতুন আয়কর আইন। আইনে নির্ধারণ করে দেওয়া ফর্মুলা অনুযায়ী আয়কর নির্ধারণ হবে। এ লক্ষ্যে ‘আয়কর আইন, ২০২৩’-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান যে ইনকাম ট্যাক্স আইন, এর মূল আইনটি ছিল ১৯২২ সালের। পরবর্তীকালে ১৯৮৪ সালে একটা অধ্যাদেশ করা হয়, সেটা দিয়েই আমরা পরিচালিত হয়ে আসছি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভার একটা সিদ্ধান্ত ছিল সামরিক শাসনের সব আইন এবং ইংরেজিতে যে আইন আছে, সেগুলো পরিবর্তন করে যুগোপযোগী করে প্রণয়ন করা। সে কারণে আমাদের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে এ আইনের খসড়াটি তৈরি করা হয়েছে। আইনটি আজকে নীতিগত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়। মন্ত্রিসভা পর্যালোচনা করে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিদ্যমান আইনটি ইংরেজিতে, ওটাকে বাংলায় করা হয়েছে। এটা সহজবোধ্য করা হয়েছে। ভাষা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে যেখানে জটিলতা বেশি ও অস্পষ্টতা ছিল, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের ট্যাক্স কর্মকর্তাদের যে অবাধ ‘ডিসক্রিশনারি পাওয়ার’ ছিল তা সীমিত করা হয়েছে। রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে যেসব কাগজপত্র দরকার হবে, বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে সেগুলো সহজতর করা হয়েছে।

মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা এখন যে আইসিটিনির্ভর হতে যাচ্ছি ইনকাম ট্যাক্স পদ্ধতিতে, সেটাকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের চেষ্টা করা হয়েছে। এটি খুব বড় একটা আইন। সম্ভবত ৩৪৮টি ধারা রয়েছে। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন ধাপে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে শেয়ার করেছে, তাদের সঙ্গে মিটিং করা হয়েছে। এমনকি ওয়েবসাইটে দিয়ে মন্তব্যও নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে কেবলমাত্র উৎসে কর কর্তন সংক্রান্ত ২৯টি রিটার্ন ও বিবরণী দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেটি প্রস্তাবিত আইনে ১২টি করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ডিসক্রিশনারি পাওয়ার বিষয়ে অন্তত ২০টি ক্ষেত্রে, আগে অফিসারের নিজের ক্ষমতা বলে যেটা যৌক্তিক মনে করতেন সেটা করতেন। এখন সেখানে গাণিতিক ফর্মুলা দেওয়া হয়েছে। ওই ফর্মুলায় যে রেজাল্ট আসবে, সেটাই হবে তার জন্য নির্ধারিত ট্যাক্স। অফিসার নিজে ইচ্ছা করলেই বাড়াতে বা কমাতে পারবে না।

তিনি বলেন, আমাদের পুরো কাজ যেন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা যায়, সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে বলে তারা (অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ) জানিয়েছেন। ট্যাক্সের বেজটা যেন সম্প্রসারণ হয়, সেই সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ আইনের মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর দেওয়া আরও সহজ করা হবে। অনলাইনে আমরা এখন যেভাবে দিই, যেভাবে প্রশ্নগুলো আসে, সেগুলো অনেক সহজ করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমার ওপর কত ট্র্যাক্স ধার্য হবে, আগে আয়কর কর্মকর্তা এটা কিছুটা ডিসাইড করতেন। আয়কর কর্মকর্তার কাছে যেটা যৌক্তিক বলে মনে হতো, সেটা উনি করতে পারতেন। এতে আপিলের সংখ্যা বেড়ে যেতো। আমাকে করতেন, আমি মানতাম না, আমি তখন আপিলে চলে যেতাম। এখন যেটা করা হয়েছে ওই কর্মকর্তার সাবজেক্টিভ জাজমেন্টের ওপর নয় বরং একটা ফর্মুলা করা হয়েছে। সেখানে অবজেক্টিভ ইনফরমেশনগুলো দেবেন, ফর্মুলা আপনাকে ক্যালকুলেট করে দেবে। এতে হয়রানির সুযোগ কমে যাবে।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ