মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমে আসায় কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম নিম্নমুখী। এর ধারাবাহিকতায় গেল সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়েছে। এ নিয়ে টানা দুই সপ্তাহ স্বর্ণের দামে বড় পতন হলো। এতে আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে স্বর্ণের দাম।
স্বর্ণের পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে দরপতন হয়েছে রূপারও। স্বর্ণ ও রূপার পাশাপাশি বড় দরপতন হয়েছে আরেক দামি ধাতু প্লাটিনামের।
গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। রূপার দাম কমেছে ২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। অপরদিকে প্লাটিনামের দাম কমেছে ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় গত ১৩ জানুয়ারি থেকে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাজুসের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৩ জানুয়ারি থেকে দেশের বাজারে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৮৩ টাকা কমিয়ে ৭২ হাজার ৬৬৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৯ হাজার ৫১৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬০ হাজার ৭৬৯ টাকায় ও সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরি স্বর্ণ ৫০ হাজার ৪৪৭ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
স্বর্ণের দাম কমলেও রুপার পূর্বনির্ধারিত দাম বহাল রয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রূপার বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রূপার দাম ১ হাজার ৪৩৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ১ হাজার ২২৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার দাম ৯৩৩ টাকা।
বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম কমানোর পর বিশ্ববাজারে কয়েক দফা দাম কমেছে। গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩৫ দশমিক ৪৯ ডলার কমেছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৩৪ দশমিক ৩৯ ডলারে নেমে এসেছে। আগের সপ্তাহে স্বর্ণের দাম কমে ২ দশমিক ১৪ শতাংশ। টানা দুই সপ্তাহের এই পতনে আট মাসের মধ্যে স্বর্ণের দাম এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে অবস্থান করছে।
এর আগে গত নভেম্বর মাসে স্বর্ণের দাম কমেছিল ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। আর ফেব্রুয়ারিতে স্বর্ণের দাম কমল ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ যা একক মাস হিসেবে নভেম্বরের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
অপরদিকে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দশমিক ৭৪ শতাংশ কমার মাধ্যমে সপ্তাহের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে রূপার দাম কমেছে ২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স রূপার দাম দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬৬ ডলার। এই দরপতনের পরও মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে রূপার দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
এদিকে স্বর্ণ ও রূপার দরপতনের সঙ্গে গেল সপ্তাহে বড় পতন হয়েছে আরেক দামি ধাতু প্লাটিনামের। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম ২৭ দশমিক ৫৮ ডলার কমে ১ হাজার ১৮৮ দশমিক ৭০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই দরপতনের ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে প্লাটিনামের দাম কমেছে ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ।