জাতীয় চিড়িয়াখানায় আরও পাঁচ প্রজাতির প্রাণী আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে আফ্রিকান সিংহ, লামা, রেড ক্যাঙ্গারু, গগণবেড় বা পেলিক্যান পাখি ও ওয়াইল্ড বিস্ট।
কত সংখ্যক প্রাণী আনা হবে তা নির্ধারণ না করা হলেও, প্রাণী কেনার টেন্ডার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রাজধানীর জাতীয় চিড়িয়াখানা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, কোভিডের কারণে গতবার টেন্ডারটা পিছিয়েছে। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। আমরা আবার টেন্ডার করেছি, প্রসেসটা চলছে। তিনি বলেন, পাঁচ রকমের প্রাণী নিয়ে আসছি। আমরা সময় দেবো, হয়তো তিন মাসের মধ্যেই চলে আসবে।
বর্তমানে জাতীয় চিড়িয়াখানায় ১৩৫ প্রজাতির মোট ৩ হাজার ১৩০টি প্রাণী রয়েছে। যার মধ্যে ১ হাজার ১৪৫টি অ্যাকুরিয়ামে ফিশ রয়েছে। ৫৮ প্রজাতির ১ হাজার ৫৭৪টি পাখি রয়েছে এবং অন্যান্য ৬৯৩টি প্রাণী রয়েছে।
চিড়িয়াখানায় হরিণ ও ময়ূরের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের শুরুর দিকে অতিরিক্ত কিছু প্রাণী বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। প্রথমে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় এক জোড়া হরিণ বিক্রি করা হলও পরে তা কমিয়ে ১ লাখ টাকা করা হয়েছে। ১৩ মাসে প্রায় ১৫২টি হরিণ ও ৭০টির মতো ময়ূর বিক্রি করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
ডা. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, হরিণ ও ময়ূর কেনার প্রচুর আবেদন পাচ্ছি। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি ১৩ মাসে ১ কোটি ১০ লাখ টাকার হরিণ বিক্রি হয়েছে। ২৪ লাখ টাকার ময়ূর বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, ময়ূর আমরা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। আমাদের স্টকের ওপর নির্ভর করে আগামীতে হয়তো আবার বিক্রি করার চিন্তা-ভাবনা করবো। এখন যা ময়ূর আছে সেগুলো আমাদের লাগবে। প্রজনন বাড়লে তখন হয়তো বিক্রি করবো। আমরা হরিণ বিক্রি করছি, প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। চিড়িয়াখানা তো প্রজনন কেন্দ্র নয়, বিক্রি করা আমাদের টার্গেট নয়।
চিড়িয়াখানার প্রাণী বিক্রি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হরিণের সংখ্যা অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছিল। সংস্থানের ব্যবস্থা, ব্যবস্থাপনা, খাদ্যের বাজেট সবকিছু মিলিয়ে আমাদের অতিরিক্ত যেটা, সেটা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ক্রমে আমরা বিক্রি করছি।
বিক্রির পর মালিকরা প্রাণীগুলোর চিকিৎসা বা রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত সেবা সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা অফিসারদের কাছ থেকে পাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন কোনো খামারি বা রিসোর্টের মালিকের কাছে হরিণ বিক্রি করি, সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানা অফিসার, জেলা অফিসারকে জানাই। যারা নিয়ে যায় তাদেরও বলি সংশ্লিষ্ট উপজেলা অথবা জেলা অফিসারের সঙ্গে আপনারা যোগাযোগ রাখবেন, যাতে তত্ত্বাবধানটা তারা সঠিকভাবে করতে পারে। অসুখ-বিসুখ হলে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া, পরামর্শ দেওয়া এগুলো তারা পেতে পারেন। অসুখ-বিসুখ হলে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ তারা উপজেলা থেকে নিতে পারেন।
সম্প্রতি কিছু চিত্রা হরিণ বাচ্চা দিয়েছে ও ইমু পাখি ডিম দিয়েছে। ইমু পাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানান ডা. মো. আব্দুল লতিফ।