বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিন মাসের জন্য ‘এয়ার ট্রাভেল বাবল’ চুক্তি হতে যাচ্ছে। দ্রুত চুক্তি সম্পাদন করতে উভয় দেশ সম্মতি প্রকাশ করেছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ‘এয়ার বাবল’ চুক্তির ব্যাপারে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মতামত চেয়ে নোট ভারবাল পাঠায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ অক্টোবর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ মিশনে প্রস্তাবের উত্তর পাঠায়। বাংলাদেশ মিশন গত ৮ অক্টোবর ভারতীয় প্রস্তাবনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে দ্রুত ‘এয়ার বাবল’ চুক্তি সম্পাদন করার পক্ষে মত দেয়।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, আমরা যে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছিলাম সেটির ভারতের উত্তরসংবলিত চিঠি আমি এখনো হাতে পাইনি। তবে আমাদের প্রস্তাবগুলো যদি তারা মেনে নেয়, তা হলে দ্রুত আমরা ‘এয়ার বাবল’ চুক্তিতে যাব।
বেবিচকের প্রস্তাব ছিল- ‘এয়ার বাবল’ চুক্তির অধীনে বাংলাদেশ ও ভারত ২৮টি করে ৫৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এতে সপ্তাহে ৫ হাজার জনের মতো যাত্রী উভয় দেশে যাতায়াত করতে পারবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিউত্তরে স্পাইস জেট, ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া, গোএয়ার, ভিস্তারা- এই ৬ এয়ারলাইন্স দিল্লি-কলকাতা-চেন্নাই-মুম্বাই-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে ২৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে বলে তালিকা দিয়েছে। এ ছাড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বেশ কিছু বিধিনিষেধও থাকছে এ চুক্তির আওতায়। অন্যদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ঢাকা-দিল্লি, দিল্লি-ঢাকা, ঢাকা-কলকাতা ও কলকাতা-ঢাকা রুটে, ইউএস বাংলা এয়ার লাইন্স ঢাকা-কলকাতা, কলকাতা-ঢাকা, ঢাকা-চেন্নাই, চেন্নাই-ঢাকা রুটে এবং নভোএয়ার ঢাকা-কলকাতা ও কলকাতা-ঢাকা রুটে বিমান পরিচালনা করবে বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এয়ার বাবল চুক্তির শর্তে ভারতের পক্ষ থেকে আগের প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, যারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাবেন তাদের প্রত্যেককে আবার নতুন করে ভারতীয় ভিসা নিতে হবে। আগের ভারতীয় ভিসার মেয়াদ থাকলেও সেটি আর কার্যকর হবে না। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ দীর্ঘ মেয়াদে যাদের ভিসা আছে তাদের মেয়াদ থাকা পর্যন্ত ভিসার বৈধতা দেওয়ার কথা প্রস্তাব করেছিল। প্রতিউত্তরে ভারত যাদের দীর্ঘ মেয়াদে এখনো ভিসার মেয়াদ আছে, তাদের মেয়াদ থাকা পর্যন্ত ভিসার বৈধতা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া ভিসা আবেদন দ্রুততম সময়ে সর্বোচ্চ সাত কর্মদিবসের মধ্যে সম্পন্নের প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। ভারত ভিসা আবেদন দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে। আবেদনের দিন থেকে সর্বোচ্চ সাত কর্মদিবসের মধ্যে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি করা হবে বলে ভারত জানিয়েছে।
একজন রোগীর সহযোগী হিসেবে ৩-৪ জন ব্যক্তির ভিসা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল বাংলাদেশ। রোগীর সহযোগী হিসেবে সর্বোচ্চ তিনজনের ভিসা দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের প্রস্তাবে উভয় দেশের যাত্রীদের জন্য ৭২ ঘণ্টার আগের পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে। ভারত এ প্রস্তাবেও সম্মতি জানিয়ে বলেছে, এয়ারলাইন্সগুলোকে এ ব্যাপারে অভিহিত করা হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে এয়ার বাবল চালু হলে মেডিক্যাল, বিজনেস ও অফিসিয়াল ক্যাটাগরিতে ভারতে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। তবে ট্যুরিস্ট ভিসা আপাতত বন্ধ থাকবে।