দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে সরকার। এজন্য স্কুল-কলেজে আইটি ল্যাব স্থাপন থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ হচ্ছে হাইটেক পার্ক। যদিও ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করছেন নানা প্রতিকূলতা নিয়ে। ব্যাংক লোন পাচ্ছে না আইটিখাত। অনলাইনে টাকা লেনদেনের সুরক্ষিত মাধ্যম পেপল আসেনি এখনো। আছে দক্ষ জনবলের অভাব। সংশ্লিষ্টরা দেশে নির্মাণাধীন হাইটেক বা সফটওয়্যার পার্কগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ইন্টারনেটের ধীরগতিকে রপ্তানি আয়ের বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করছেন অনেকে।
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের ঘোষণা ছিল। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ঘোষিত সে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ক্ষমতায় এসে সরকার দেশের বিভিন্ন হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এছাড়া কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা শুরু করে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে শিল্প হিসেবে প্রযুক্তিকে কীভাবে গড়ে তোলা যায়, তারও একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয় সরকার।
আরও পড়ুন : সিমের ভ্যাট-কর রেয়াত চাচ্ছে টেলিকম অপারেটররা
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আইসিটি খাতে ১২ বছর আগে রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। আর এখন নীতিগত সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে আইসিটি শিল্প থেকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করছে সরকার। এক্ষেত্রে সরকারের লক্ষ্য, ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়।
‘২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত হওয়ার পর ২০০৯ সালে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্ব, পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে ধাপে ধাপে মানবসম্পদ উন্নয়নে ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নে কাজ শুরু হয়। এর মাত্র ১২ বছরের মধ্যে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটিতে উন্নীত করতে পেরেছি আমরা।’
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) নির্বাহী কমিটির সভাপতি শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, প্রথমত আমাদের দেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে যেসব সফটওয়্যার এবং বিপিও খাতে প্রকিউরমেন্ট হবে, এগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। নিজের তৈরি আইটিপণ্য নিজের দেশে বিক্রি হলে সে অভিজ্ঞতা দিয়ে এক্সপোর্ট বাড়ানো যাবে। নিজের সক্ষমতার জায়গাটা নিজে আগে তৈরি করতে হয়। নিজেরা ব্যবহার করে বুঝতে হয়, এখানে কী সমস্যা। তাই সরকারকে আগে ইউজার হতে হবে। আমাদের ব্যাংকসহ অন্যদেরও ইউজার হতে হবে।
‘তবে আশার কথা হলো, আগে বেশিরভাগ ব্যাংকই বাইরের সফটওয়্যার ব্যবহার করতো, এখন কিন্তু অনেকাংশে লোকাল সফটওয়্যার চলে আসছে। লোকাল সফটওয়্যারও ভালো কাজ করছে। এভাবে সব ক্ষেত্রেই লোকাল পণ্যকে সরকার যদি গুরুত্ব দেয়, তবে সেগুলো রপ্তানির ক্ষেত্রেও ধীরে ধীরে বড় প্রভাব পড়বে।’