দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সেন্ট্রালি একটি ল্যাব নারায়ণগঞ্জে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার । যা হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ। এছাড়া প্রতিটি বিভাগে আটটি ল্যাব এবং একটি করে ভ্রাম্যমাণ ল্যাব করা হচ্ছে। যেগুলো বিভাগের যেকোনো এলাকায় খাদ্য গ্রহণ করে তা পরীক্ষা করতে পারবে।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রান্ড বলরুমে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত: ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ ও বিধি-প্রবিধি সম্পর্কে অবহিতকরণ এবং জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, খাদ্যের নিরাপত্তা রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। নিরাপদ খাবার নিশ্চিত হলেই একটি সুস্থ, সবল, কর্মঠ এবং মেধাবী জনগোষ্ঠী তৈরি করা সম্ভব হবে। আর সেই লক্ষ্যেই ২০১৩ সালে প্রণয়ন করা হয় নিরাপদ খাদ্য আইন- যা কার্যকর হয় ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার এর সভাপতিত্বে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম এবং চ্যানেল আই এর পরিচালক ও বার্তা সম্পাদক শাইখ সিরাজ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খাদ্য সচিব বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার কাজটি ধাপে ধাপে এগোচ্ছে। এরইমধ্যে সকল জেলায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আট বিভাগীয় শহরে নিরাপদ খাবার টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে। খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত সকল অংশীজনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং মাঠ পর্যায়ে জনসচেতনতা বাড়াতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে গ্রাহকের কাছে নিরাপদ খাবার পৌঁছে দেয়া আরও সহজ হবে।
দেশে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম থেকেই নিরাপদ খাদ্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে শাইখ সিরাজ বলেন, মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক তার অজান্তেই খাদ্যকে বিষাক্ত করে তুলছেন। আবার প্রয়োজনেরও বেশি সার ব্যবহার করে তিনি মাটির উর্বরতাও নষ্ট করে ফেলছেন। উৎপাদক পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে যৌথভাবে কৃষি, খাদ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে যেমন সুফল দেখা দেবে, তেমনি ভুল তথ্য প্রচারণায় সমাজে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। জনগণের মাঝে খাদ্য নিরাপত্তা এবং এ সংক্রান্ত আইন, বিধি ও প্রবিধান সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যম কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন। এছাড়াও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য রেজাউল করিম, একাত্তর টেলিভিশন এর হেড অব নিউজ বায়েজিদ মিল্কি, ডেইলি সানের নির্বাহী সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস, বাংলাভিশনের হেড অব নিউজ মাসুদ কামাল, ডিবিসি চ্যানেলের প্রধান সম্পাদক প্রণব সাহা, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি ইমরান হাসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
সেমিনারে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি এবং হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতারা অংশ নেন।