বুধবার, ১৫ই জানুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

পেটের মেদ বাড়ে যেসব খাবারে

প্রকাশঃ

পেটের মেদ কমানোর জন্য চাই ব্যায়াম, মানসিক চাপ ও অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ এবং নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস।

আর এই ক্ষেত্রে নানান ধরনের খাবার বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়। তবে সবচেয়ে বাজে খাবারগুলোর কথা হয়ত অনেকেরই জানা নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’য়ের ‘এপিডেমিওলজি অ্যান্ড পাবলিক হেল্থ’ বিভাগের করা গবেষণায় দেখা গেছে, যারা অতিরিক্ত ক্যালরি ও অধিক স্বাদযুক্তি উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি গ্রহণ করেন, তাদের পেটে জমে অতিরিক্ত চর্বি।

এই গবেষণার বরাত দিয়ে ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো ভিত্তিক পুষ্টিবিদ নোয়া কুইজাডা বলেন, “আসলে এই গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, অন্যান্য প্রভাবকের চাইতে বিশেষ কিছু খাবার মেদভুঁড়ি বাড়াতে ভূমিকা রাখে।”

আর সেই খাবারগুলো হল

প্রক্রিয়াজাত মাংস

পেপেরনি, সসেজ, কোল্ড মিট, বেকন – এই ধরনের প্রক্রিয়াজাত মাংস স্বাস্থ্যকর নয়। এগুলো শুধু চর্বিই বাড়ায় না পাশাপাশি মলাশয়ে ক্যান্সার হওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখে।

তাই সপ্তাহে একবার পেপেরনি পিৎজ্জা খাওয়া যেতে পারে। তবে সপ্তাহে একাধিকবার এই ধরনের মাংস খেলে বাড়বে পেটের মেদ।

সাদা রুটি

সাদা আটা দিয়ে বানানো রুটি কিংবা বাজার থেকে কিনে আনা সাদা পাউরুটি- এগুলোতে থাকে না পর্যাপ্ত আঁশ ও পুষ্টি উপাদান। কারণ প্রক্রিয়াজাত করার ফলে সাদা আটা, ময়দা ও রুটি থেকে ঝরে পড়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ।

আর প্রতিদিন এই সাদা রুটি গ্রহণ করলে পেটের ভেতরে মেদ জমবেই। এমনই দেখা গেছে গবেষণায়।

তাই যখনই সম্ভব পূর্ণ শষ্যের থেকে তৈরি রুটি খেতে হবে। অর্থাৎ বাদামি বা লাল আটার রুটি বা ব্রাউন ব্রেড।

ক্যান্ডি

নানান ধরনের মিষ্টি চকলেট বা ক্যান্ডি যে মেদ বাড়ায়, সেটা নতুন করে বলার নেই। এই সরল কার্বোহাইড্রেইটস সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া হয়, তবে পেট ভরে না। কারণ এতে থাকে না কোনো প্রোটিন এবং আঁশ।

মার্কিন পুষ্টিবিদ লরেন মানাকার একই প্রতিবেদনে বলেন, “দেহের শক্তি যোগানোর প্রধান উপাদান হল কার্ব। তবে সেটা খরচ করা না হলে মেদ আকারে দেহে জমা হয়, বিশেষ করে পেটের আশপাশে।”

বোতলজাত সালাদ ড্রেসিং

ওজন কমাতে সালাদ খেতে বলা হয়। তবে এই খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে বোতলজাত ড্রেসিং ব্যবহার করলে পেটে মেদ জমার ঝুঁকি বাড়বেই।

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া ভিত্তিক পুষ্টিবিদ ও ‘ব্যালেন্স ওয়ান সাপ্লিমেন্টস’ বইয়ের লেখক ট্রিস্টা বেস্ট বলেন, “সব সালাদ ড্রেসিং যে স্বাস্থ্যকর হবে এমন কোনো কথা নেই। বেশিরভাগ ড্রেসিং বাড়াতে পারে ক্যালরি ও চর্বি গ্রহণের মাত্রা। তাই বোতলে ভরা সালাদ ড্রেসিং কেনার আগে, লেবেলে উল্লেখিত উপাদান ও পরিমাণ দেখে নেওয়া উচিত।”

বরং সালাদে ভিনেগার, অলিভ অয়েল বা লেবুর রস মেখে খাওয়া উপকারী।

আইস ক্রিম ও কোমল পানীয়

কুইজাডা বলেন, “চিনি ও স্যাচুরেইটেড ফ্যাট বেশি থাকে আইসক্রিমে। তাই প্রতিদিন খেলে মেদ বাড়বেই।”

একই বিষয় ঘটে নিয়মিত কোমল পানীয় পান করলে।

সকালে নাস্তায় চিনিযুক্ত খাবার

হতে পারে সেটা মিষ্টি সিরিয়াল কিংবা ঘরে বানানো মিষ্টান্ন- যে কোনো চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে সকাল শুরু করলে পেটের চারপাশে মেদ বাড়বেই।

কারণ প্রোটিনহীন এসব সরল শর্করা বেশিক্ষণ পেটভরা অনুভূতি দেয় না। ফলে সারাদিনে খাওয়ার পরিমাণও বাড়ে।

মোড়কজাত পেস্ট্রি কেক

বাজারে দোকানে নানান ধরনের কেক, পেস্ট্রি, মাফিন ও ডোনাট কিনতে পাওয়া যায়। সুস্বাদু আর মজাদার হলেও এগুলোতে উচ্চ মাত্রায় চিনি ও ‘ট্রান্স ফ্যাটস’ থাকে।

ডেনমার্কের ‘ইউনিভার্সিটি অফ কোপেনহেগেন’য়ের গবেষকদের করা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, যারা ‘ব্রেড রোল’ বা এই ধরনের বেইক করা খাবার প্রতিনিয়ত খায়, তাদের দেহের মধ্যভাগ স্ফিত হয়।

ভাজা খাবার

হতে পারে দেশি আলুর চপ, শিঙাড়া, বড়া, পেঁয়াজু; কিংবা চিকেন ফ্রাই, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই- এই ধরনের তেলে ভাজা যে কোনো ‘ফাস্ট ফুড’ নিয়মিত খেলে পেটে মেদ জমবেই।

এগুলোকে বলা হয় অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার। যা খেলে ‘ভিসারাল ফ্যাট’ মানে পেটে অন্ত্রের চারপাশে চর্বি জমে।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ