মার্কিন কোম্পানি ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিনের এক ডোজ নেওয়ার পর করোনা থেকে ৯০ শতাংশ সুরক্ষা মিলছে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা। ইসরায়েলে পরিচালিত গণটিকা কর্মসূচি সংক্রান্ত ডাটা বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে এমন দাবি করেছেন তারা।
ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষকরা বলছেন, প্রথম ডোজ নেওয়ার ২১ দিনের মধ্যে এ সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। অবশ্য, এর আগে ফাইজার জানিয়েছিল, তাদের টিকার এক ডোজের কার্যকারিতা ৫২ শতাংশ।
আর ইসরায়েলি ভ্যাকসিন প্রচেষ্টার ইনচার্জ অধ্যাপক নাচমান অ্যাশ গত মাসে দাবি করেছিলেন, ফাইজার যেমনটা বলেছে তারচেয়েও কম কার্যকর প্রথম ডোজ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ফাইজার-বায়োএনটেক ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়ার ১২ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য। সুরক্ষিত মানুষের সংখ্যা বাড়াতে এ উদ্যোগ নিয়েছে তারা। তবে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকে সমালোচনা শুরু করেন। কারণ ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার ২১ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা।
সমালোচকদের দাবি, এক ডোজ টিকা নেওয়ার পর পর্যাপ্ত ইমিউনিটি তৈরি হবে না। সম্প্রতি একটি মুদ্রণ পূর্ববর্তী গবেষণা প্রতিবেদনেও দাবি করা হয়েছিল, এক ডোজে অতটা কার্যকর হবে না। ইসরায়েলে টিকাদান কর্মসূচির অভিজ্ঞতার আলোকে সে গবেষণাটি করা হয়েছিল।
এমন অবস্থায় যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে নতুন গবেষণা শুরু করে ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। অধ্যাপক পল হান্টার ও ড. জুলি ব্রেইনার্ড আবারও ইসরায়েলি টিকা কার্যক্রমের ডাটা বিশ্লেষণ করেন। এতে দেখা যায়, ফাইজারের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া আগেই উচ্চপর্যায়ের সুরক্ষা তৈরি হয়েছে। তারা আরও সতর্ক করেছেন, ভ্যাকসিন গ্রহণের প্রথম আট দিনে সংক্রমণের ঝুঁকি দ্বিগুণ থাকে। এর জন্য মানুষের সচেতনতার ঘাটতিকে দায়ী করেছেন গবেষকরা।
পূর্ববর্তী গবেষণার সঙ্গে নতুন এ গবেষণার ফলের পার্থক্য হওয়ার ব্যাপারে গবেষক হান্টার বলেন, ‘ডাটা নিয়ে কীভাবে পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে তা নিয়ে বিস্তর পার্থক্য আছে। ১৮ দিনের পর প্রথম ডোজের কার্যকারিতা পরীক্ষা করেননি তারা। অথচ এ সময়সীমার পরে পরীক্ষা করা হলেই দেখা যায়, ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ বিলম্বিত করার ক্ষেত্রে এক ডোজ কতটা কার্যকর।’
হান্টার জানান, ইসরায়েলে প্রথম ডোজ নেওয়ার পর যারা আক্রান্ত হয়েছেন, দেখা গেছে তারা অষ্টম দিনের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন।এর পরে আক্রান্ত হওয়ার হার কম। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে কেন সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে তা আমরা জানি না, হতে পারে টিকা নেওয়ার পর মানুষ তাদের সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা বা চর্চাগুলো কমিয়ে দেয়।’